কামরুল আহসান: মানুষ পশু থেকে নিবর্তিত হয়েছে এটা জানতে হবে এই কারণে নয় যে, মানুষ মূলত পশু, বরং এখনো তার মধ্যে পশুত্বের যে অংশটুকু রয়ে গেছে সেই বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য। পশুত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে বলেই মানুষ হয়েছে। সুফিরা মানুষের এই পশুত্বের নাম দিয়েছিলেন নফ্স। সাইকোলজিস্টরা নাম দিয়েছেন ঈদ। ঈদ মানে আদিম প্রবৃত্তি। আদিম প্রবৃত্তি মানে কেবল ভোগ-দখলের কামনা- বাসনা। হিংস্রতা।
মানুষ যে কতটা অসভ্য-বর্বর তা জানার জন্য ইতিহাসও পাঠ করার প্রয়োজন নেই। আমাদের চারপাশে তাকালেই তা বোঝা যায়। বর্বর জেনেও যে আমরা সচেতন হই না। কারণ আমাদের অশিক্ষা-অসচেতনতা। বেশির ভাগ মানুষ এখনো রয়ে গেছে আদিম স্তরেই। অর্থাৎ ইদই এখনো শক্তিশালী। মানুষ যদি বর্বর না হতো, তাহলে কি সে অন্য কাউকে খুন করতে পারতো? মানুষ যদি পশুই না হবে, সে মাংস খাবে কেন? আদিম প্রবৃত্তির এমন কোন অংশটুকু আছে মানুষের, যা পশু থেকে আলাদা?
পাঠ্যপ্স্তুক থেকে বিববর্তনবাদ বাদ দেওয়া হবে মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার মতো ব্যাপার। তাহলে তো জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাসেরও অনেক কিছু বাদ দিতে হয়। মানুষ যদি শুধু ধর্ম ধরে বসে থাকতো, তাহলে তো জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথে একপা-ও যাত্রা করতে পারতো না। অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর যদি ধর্ম দিতে পারতো, তাহলে আর কোনো জ্ঞান-বিজ্ঞানের দরকার হতো না। যারা বিববর্তনবাদ অবিশ্বাস করেন তারা পারলে এই প্রশ্নের উত্তর দিন তো জীবাশ্ম জ্বালানি কোত্থকে এলো? কীভাবে এলো? এবং কত লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে প্রাণবৈচিত্র আছে? পৃথিবীতে মানুষের সভ্যতার প্রায় এক লক্ষ প্রজন্ম গত হয়েছে। যিশুখ্রিস্টের জন্ম মাত্র একশ প্রজন্ম আগে। আদমের জন্ম তাহলে কতশত বছর আগে মনে হয়! লেখক ও সাংবাদিক
আপনার মতামত লিখুন :