শিরোনাম
◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট

প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৪৯ রাত
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৪৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেয়েদের বহু বাধা অতিক্রম বা যুদ্ধ করে অর্জিত বিজয়

কাজী হানিয়াম মারিয়া

কাজী হানিয়াম মারিয়া: সৌদিআরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন পাঠ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ছেলে হাফেজ তাকরীম তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। যে কোনো প্রতিযোগীতায় জয় লাভ আনন্দের এবং নিঃসন্দেহে সে দেশের জন্য সুনাম অর্জন করেছে। তাকে অভিনন্দন জানাতে কার্পণ্য বোধ করবো না। 

এখন আসুন একটু বিশ্লেষণ করি। তাকরীমের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আমি জানি না। যেহেতু বাংলাদেশে স্বচ্ছল পরিবারের বাচ্চারা সচরাচর মাদ্রাসায় যায় না, তাই ধরে নিচ্ছি সে অস্বচ্ছল পরিবারের। আবার অনেক পরিবারই ছেলেমেয়েকে হাফেজ বানায় পরকালে বেহেশত লাভের আশায়। তাকরীমের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনাও থাকতে পারে। একটি ছেলে যখন পবিত্র কোরআন পাঠ করা শুরু করে তাকে সমাজের কোনো বাধার মুখে পড়তে হয় না। বরং সে সমাজের অনেক প্রশংসা এবং বাহবা নিয়ে  উৎসাহের সাথে শিখতে থাকে। মাদ্রাসার বাচ্চারা হয়তো ভালো খাবার পায় না, তবে না খেয়ে থাকে না। মাঝরাত্রিরে উঠে তারা কোরআন না বুঝে মুখস্ত করা শুরু করে এবং অনেকেই কুরআনে হাফেজ হয়ে উঠে। 

আমি আবারও বলছি, তাকরীম বা কুরআনে হাফেজ হয়ে উঠাকে আমি কোনোভাবেই সহজ বলছি না। কুরআনে হাফেজ একজন বাচ্চা সমাজে যথেষ্ট সম্মান পায়, সম্মান পাবার যোগ্যও। আমি জানি না, তাকরীম কুরআন বুঝে মুখস্ত করেছে কিনা! কুরআন বুঝে পড়ার ফজিলত এবং উপদেশ পবিত্র কুরআনেই নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু কুরআন আরবীতে নাযিল হয়েছে এবং নবীর ভাষাকে সম্মান জানাতে আমাদের মতো দেশগুলোতে না বুঝে কুরআন পড়া চালু আছে। আমাদের দেশে যে পরিমাণ হাফেজ আছে, তারা যদি কুরআনের মাহাত্ম্য বুঝতো তাহলে মাদ্রাসায় এত অঘটন ঘটতো না। তারপরও আমি তাকরীমের বাহবা দিবো। কারণ আরবী ভাষাটি সে শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছে। 

আমাদের ফুটবলার মেয়েরা সবাই দরিদ্র পরিবারের। ফুটবল খেলতে গিয়ে তাদের নিজের পরিবারের সাথেই যুদ্ধ করতে হয়েছে। মাথার উপর ছাদ নেই, পেটে ভাত নেই, প্রতিবেশির তিরস্কার, মন্দকথা কি না শুনতে হয়েছে! এমনকি বিজয়ী হবার পরও শুনতে হয়েছে, তাদের কোনো হুজুর বিয়ে করবে না। তার চেয়েও বড় কথা, কর্তৃপক্ষ খেলোয়াড়দের পরবর্তী খেলার জন্য গ্রুমআপ করার বদলে ওদের বিয়েতে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই মেয়েগুলো সম্পূর্ণ নিজেদের প্রচেষ্টায় এবং পরিশ্রমে এই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। 

উপরের দুটো প্যারায় যদি সমাজের বৈষম্যের চিত্র একটু বুঝতে পারেন (যদিও সবাই জানি), তাহলে জানতে চাই দুটো বিজয় এক কীভাবে হয়? সংবর্ধনাইবা কীভাবে একইরকম হবে? কেউ সমাজের প্রশংসা পেয়ে নিজেকে তৈরি করেছে, আর কাউকে সমাজের বাঁধা অতিক্রম করতে হয়েছে। এই কুরআন প্রতিযোগিতা কি কোনো সর্বজনীন প্রতিযোগিতা ছিলো? মানে সব ধর্মের সবাই কুরআন শেখে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে? এই প্রতিযোগিতাটি শুধুই মুসলিমদের জন্য। সেই বিবেচনায় এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ব্যক্তির সংবর্ধনা কীভাবে পুরো দেশ দিতে পারে?  

মেয়েরা সামাজিক বৈষম্যের সাথে লড়ছে, নিজেদের দারিদ্র, ধর্মীয় বাঁধা, সমাজের প্রতিকূলতা, পথে-ঘাটে চলাফেরার হয়রানির সাথে যুদ্ধ করে এই বিজয় ছিনিয়ে আনার পরও কতো কটু কথা শুনছে। নিজেদের সংগঠন পর্যন্ত ওদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। তাহলে ভাবুন, দুটো বিজয়ের মাহাত্ম্য এক হয় কীভাবে। পুনশ্চ: এই পোস্টে তাকরীম নামের ছোট ছেলেটির বিজয়কে হেয় করা হচ্ছে না, কিন্তু যারা দুটো বিজয়ের উদযাপনকে মিলিয়ে ফেলছেন তাদেরকে একটু আয়না দেখালাম। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়