আফসান চৌধুরী: আমাদের বন্ধু ও সহ কর্মী আনিস আলমগীর আমার শার্টের পিছে লাগছে। আমার শার্ট এর আগেও আক্রমণের শিকার হয়েছে নানা জনের কাছে। আমার দুইটা পরা শার্ট আছে। বয়স বছর ৮-১০। অতএব ঝুরঝুরে তো হবেই। আমার কিছু এসে যায় না, একটা পড়লেই হলো। ওটা মাথাটা খাটাবার জায়গা না, তাই পাত্তা দিই না। [১] তবে কিনা এই মুহূর্তে আলমারিতে আমার প্যান্ট আছে ৩টা, শার্ট ৫টা। শার্ট দুইটা। প্যান্টের মধ্যে দুইটা দিয়েছে পাপ্পু। এই প্যান্ট দেওয়ার লাইনে সে অনেক এক্সপার্ট। একটা আমি বানিছিলাম বছর ৬ আগে, বাকি তার গিফট। ...২ শার্ট ও ১ প্যান্ট দিলো। আমার পরা শার্ট দিয়েছে মুশফিকা, না পরা সে, ইউনূস। আরো কে কে। কেউ দিলে উঠিয়ে রাখি। তারপর ভুলে যাই। মনে পড়লে কাউকে দিয়ে দিই। কাপড়চোপড় আমাকে টানে না। এটা গরিবিয়ানা দেখানো না, স্রেফ, একটা হলেই হলো মেন্টালিটি। তবে শখের গরিবিয়ানা কি তার গল্প নিচে।
[২] শরীফ মিয়ায় ক্যান্টিনে দুই টাকায় দুপুরে খাওয়া যেত। দুইটা পরোটা ১ টাকা, ১ প্লেট বুটের ডাল ১ টাকা। খুব ভালো খাওয়া। একদিন দেখি আমার এক কাছের বন্ধু, অসহায় হাসি নিয়ে ক্যান্টিনে বসে আছে। জানা গেলো তার ১০ টাকা বাকি, তাই শরীফ মিয়া খেপসে। বলসে, টাকা না দিয়া যাবেন না। ও যেই আসছে সবাইকে বলছে এই কথা বন্ধু। চারদিকে আহঃ উহু হচ্ছে, শরীফ মিয়ার কাছে তদবির চলছে, বেশ রমরমা পরিবেশ। খালি পকেটের জন্য আটকে থাকা কম না, গল্প -কথা জন্মায়। যাই হোক কি হলো শেষে জানি না। তবে পরের দিন আবার তাকে দেখা গেলো। বন্ধুটি খাদ্য রসিক ছিল, খাচ্ছে। বুঝলাম, পেমেন্ট হয়ে গেছে। কিন্তু তার অর্থকষ্টের কথা নিয়ে চর্চা হওয়াটা সুখকর ছিল তার জন্য। তার অবস্থা কত ভালো জানতাম, তাই পাত্তা দিই নাই। অনেকটা আমরা ফাটা শার্টের মতো।
লেখক ও গবেষক
আপনার মতামত লিখুন :