আফসান চৌধুরী: আমার আসক্তি একটু অন্যরকম। কানাডা থাকতে আমার সেন্টার ফর এডিকশন অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ (CAMH, University of Toronto) এর সাথে যোগাযোগ হয় ২০০৯ সালের দিকে। তাদের মতে, নেশা একধরনের মানসিক সমস্যা, অপরাধ নয়। অনেক টেস্ট আছে কারা আসক্ত হবে, কারা ছাড়তে পারবে, পারবে না, এসব নিয়ে। এক ইংরেজ মহিলা ডাক্তার কাজ করতো যার সাথে আমার খাতির হয়। আমাদের বাংলা পাড়া তার এরিয়া ছিল। আমি একদিন ওই টেস্ট করলাম।
[২] জানালো যে আমার আসক্ত হবার সম্ভাবনা বেশ, কিন্তু আসক্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আমি ধরতেও পারি, ছাড়তেও পারি টাইপের পার্সোনালিটি। ডাক্তার বলে, ‘তোমার বিপদ বোরডম। তোমার কিছুই বেশিদিন ভালো লাগে না, তাই নয়া কিছু সন্ধান করো। কী সন্ধান করো?’ আমাকে বলে একটু চোখ টিপে। ওদের দেশে ওটাই নেশা নাম্বার ওয়ান। মদ আর ড্রাগসের পর ওসবে নেশার বস্তুর মদ সহ এডিকটেড হওয়ার আমার চান্স কম।
[৩] আমি খুব হেসে বললাম, ‘লুইচ্চামি, ওটা তো লোয়ার ক্লাস লোকদের আসক্তি। তবে আমার একটা বিপজ্জনক আসক্তি আছে। আমি অনিশ্চয়তা পছন্দ করি, আর সেটা থেকে বাঁচতে আরো বেশি পছন্দ করি। আমি ইনসেক্যুরিটি এডিক্ট। এই কথা কম শুনেছে তাই ওরা কথাটা সিরিয়াসলি নিয়ে আমার লাইফের ইতিহাস শুনলো। আমি যে ২০টা চাকরি ছেড়েছি (বর্তমানে ২৭)। তার মধ্যে দেশের খুব লোভনীয় ‘জব’ আছে। সেটি শুনে ওরা মাথা নাড়লো। ওদের উত্তর, ‘এড্রেনালিন আডিক্ট’। আমার অনিশ্চয়তা রোগ আছে। নিশ্চিত হলেই অনিশ্চয়তা খুঁজি, আর অনিশ্চয়তা হলেই নিশ্চিত, এই সাইকেল চলতেই থাকে। তাতে মজা লাগে। কারণ এতে এড্রেনালিন ছাড়ে শরীর। ৯-৫টা আমার জন্য নয়, এক চাকরি বা রুজি নয়। বেশিদিন ভালো মাথার ডাক্তার, ডাক্তার আপা। লেখক ও গবেষক