লন্ডনের সোস-ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ফেরার সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে সরকার জানায়, গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়িগুলো লক্ষ্য করে একদল বিক্ষোভকারী ডিম ছোড়ে এবং গাড়ির পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করে। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সূত্র মতে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আক্রান্ত গাড়িগুলোর ভিতরে ছিলেন না।
বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশ সবসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এবং উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, এর আগে নিউইয়র্কেও সরকারি সফরে থাকা অবস্থায় মাহফুজ আলমের ওপর বিক্ষোভকারীরা হামলা চালায়। সে সময় বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনের কাঁচের দরজা ভেঙে ফেলা হয় এবং ডিম ও বোতল ছোড়া হয়। এই ঘটনার পর বাংলাদেশ কনস্যুলেট স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই হামলার চেষ্টার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণতন্ত্রে যুক্তি দিয়ে প্রতিবাদ হয়, সহিংসতা দিয়ে নয়। নিউইয়র্কে যেমন বলেছিলাম, তেমনই লন্ডনের ক্ষেত্রেও বলছি— সহিংসতা কোনো প্রতিবাদ নয়, ভয় দেখানো কোনো বাক স্বাধীনতা নয়।’
সরকার আরও বলেছে, ‘বাক স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার— গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। তবে এ অধিকার অবশ্যই দায়িত্বশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করতে হবে।’
বিবৃতিতে হাইকমিশনের গাড়ির ওপর হামলাকে ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রক্ষার কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী’ এবং ‘উসকানিমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে তিনটি প্রধান আহ্বান জানানো হয়:
১. মেট্রোপলিটন পুলিশ যেন সম্পূর্ণ তদন্ত চালিয়ে ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দোষীদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনে।
২. প্রবাসী রাজনীতিবিদ ও কমিউনিটি নেতাদের পক্ষ থেকে সহিংসতা ও হুমকির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য এবং সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।
৩. শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার যেমন স্বীকৃত, তেমনি বক্তা, ছাত্র ও নাগরিকদের নিরাপদে একত্রিত হওয়ার অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে।