ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনায় অপারেটর নিয়োগ নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। তাই অপারেটর নিয়োগের পর টার্মিনালটি কবে নাগাদ চালু হবে, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) প্লেনের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ, নিরাপদ সমুদ্র পর্যটন নিশ্চিতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
তৃতীয় টার্মিনাল কবে নাগাদ চালু হবে- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘গত সরকার রাষ্ট্রীয় দায় সৃষ্টি করে প্রচুর টাকা খরচ করে এই অবকাঠামোটা (তৃতীয় টার্মিনাল) নির্মাণ করেছে। এই অবকাঠামোটা আমরা যত দ্রুত ব্যবহার করতে পারবো, তত দ্রুত এই বিনিয়োগের বেনিফিটটা পাবো।’
তিনি বলেন, ‘এর থেকে বড় বিষয় হলো, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা হলো ৮০ লাখ যাত্রীর, সেখানে আমরা গত বছর এক কোটি ৩০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিয়েছি। সক্ষমতার চেয়ে ৫০ লাখ বেশি যাত্রী সে ক্যারি করেছে। যাত্রীদের যে দুর্ভোগ ও কষ্ট হচ্ছে সেগুলো লাঘবের জন্য একই জায়গা আরও কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা যায়, ইমিগ্রেশন, ব্যাগেজ হ্যান্ডেলিংসহ অন্যান্য যাত্রীসেবার যে প্রয়োজনীয়তা আছে সেগুলো সীমিত হয়ে যাওয়ার পরও আমরা চেষ্টা করছি এগুলোর মধ্যে ব্যবস্থা করার জন্য। আমরা খুবই চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব (তৃতীয় টার্মিনাল চালু করার)।’
‘এক্ষেত্রে আমাদের যে প্রতিবন্ধকতাগুলো কাজ করছে- একটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগ দিতে হবে। একটি জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আইএফসি (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিং করপোরেশন) আমাদের ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, আমার সঙ্গে এ পর্যন্ত চার-পাঁচটি মিটিং হয়েছে। এখান থেকে উঠেও আজকে আইএফসির সঙ্গে আমার মিটিং হবে।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা যদি ওনাদের সঙ্গে এটা নিয়ে কোনো যৌক্তিক সমাধানে না পৌঁছাতে পারি, যেটার মধ্যে আমাদের দেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হয় না; তাহলে আমরা নতুন আন্তর্জাতিক অপারেটর খুঁজবো। যাত্রীসেবা মেইনটেইন করার জন্য আমরা চাই আমাদের বিমানবন্দরটা একটা আন্তর্জাতিক মানের হোক। সেজন্য আমরা জিটুজি বা ওটিএম (ওপেন টেন্ডার মেথড) যে কোনোভাবে একটা অপারেটর নিয়োগ করবো। সে ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত আমি এই প্রচেষ্টা এক্সজোস্ট করতে না পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনাদের (তৃতীয় টার্মিনাল চালুর বিষয়ে) কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না।’
‘আমি আপনাদের এতটুকু আশ্বস্ত করতে চাই- আমরা একটি মিনিটও অপচয় করছি না। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে এর পেছনে লেগে আছি’ বলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বপ্রাপ্ত এ উপদেষ্টা।
তাহলে কি এ সরকারের সময় তৃতীয় টার্মিনাল চালু হচ্ছে না- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা তো নিশ্চয়ই থাকবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না। তবে প্রচেষ্টার কোনো ঘাটতি থাকবে না।’