২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধারা। এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬-২৭ করবর্ষে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা পাবেন তারা। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ উপস্থাপিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সীমিত আয়ের জনগণের জন্য করের বোঝা হ্রাস করা, সামাজিক সুরক্ষা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখার লক্ষ্যে ২০২৬-২০২৭ ও ২০২৭-২০২৮ করবর্ষের জন্য স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। গেজেটভুক্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত “জুলাই যোদ্ধা” করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ২০২৬-২০২৭ ও ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরের জন্য নারী ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতাদের জন্য ৪ লাখ ২৫ হাজার, প্রতিবন্ধী করদাতার জন্য ৫ লাখ, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। তবে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য আগের মতোই করমুক্ত আয়সীমা থাকছে। অর্থাৎ ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার তিন লাখ ৫০ হাজার টাকার পাশাপাশি নারী ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতাদের জন্য ৪ লাখ, প্রতিবন্ধী করদাতার জন্য ৪ লাখ ৭৫ হাজার, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ এবং তৃতীয় লিঙ্গের করদাতার করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
ওদিকে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটে জুলাইয়ে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তরুণদের দেশের উন্নয়নে আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত করতে ‘তারুণ্যের উৎসব’ উদযাপনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শিগগিরই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।