আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ঈদযাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন এবং যানজটমুক্ত করার লক্ষ্যে পশুবাহী গাড়ি মহাসড়কের বাম পাশ দিয়ে চলাচল করবে। মহাসড়কের উপর বা পার্শ্ববর্তী চিহ্নিত সম্ভাব্য ২১৭টি পশুর হাট ইজারা দেয়া হবে না। এছাড়া, পশুর হাটের প্রবেশমুখ সড়কের বিপরীতে হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বুধবার (২১ মে) এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, কোরবানির পশু পরিবহনের ট্রাকের সম্মুখে ব্যানার ব্যবহার করতে হবে এবং পণ্য পরিবহনকারী যানবাহনে যাত্রী বহন করা যাবে না। দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন দ্রুত উদ্ধারের জন্য রেকার প্রস্তুত রাখা হবে। দেশের সকল বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কের চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়ক পথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলমপার্টি, অজ্ঞাত পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মোটরযানের সুশৃঙ্খল চলাচল নিশ্চিত করা এবং দুর্ঘটনা রোধকল্পে মোটরযানের নিয়ন্ত্রিত গতিসীমা নিশ্চিত করা হবে। নসিমন, করিমন, ইজিবাইকসহ সকল থ্রি-হুইলার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করা হবে। সড়কের উভয় পাশে অস্থায়ী বাজার অপসারণ করা হবে। ফিটনেসবিহীন ও ক্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধকরণ ও মেরামতের ওয়ার্কশপসমূহে ঈদের দশ দিন পূর্ব থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
এছাড়া, জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরসমূহের আওতায় সড়ক সংস্কারের কাজ ঈদের সাত দিন পূর্বে সম্পন্ন করা হবে। ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ সকল মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ ঈদের সময় সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখা হবে। চিহ্নিত ১৪৯টি স্পটে যাটজট নিরসনে মনিটরিং টিম গঠন করে কার্যক্রম গ্রহণ এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। দেশে সকল বাস টার্মিনালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সওজ ও সেতু বিভাগের অধীন সকল সেতুতে টোল প্লাজা যানজটমুক্ত রাখার সার্বক্ষণিক ইটিসি বুথ চালু রাখা হবে।
ঈদ উপলক্ষে বিআরটিসি ঢাকা মহানগরী থেকে বিভিন্ন জেলা শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্পেশাল ঈদ সার্ভিস পরিচালনা করবে। ঈদের বন্ধের দিনে মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। গরুবাহী যানবাহন, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পঁচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ, সার এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহনসমূহ এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। যাত্রীসাধারণের নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ এবং যানজটমুক্ত যাতায়াতের সুবিধার্থে গার্মেন্টসসহ সকল শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সড়কপথে গুরুতর দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ৯৯৯-এর সহায়তায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা ও অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা রাখা হবে। একইসাথে স্বাস্থ্য বিভাগ হাইওয়ের পাশে অবস্থিত হাইওয়ে পুলিশকে হাসপাতালসমূহের তালিকা প্রদান করবে। সদরঘাটসহ সকল টার্মিনালে সিসিটিভি ও সার্চলাইটের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
ফিলিং স্টেশনগুলো ঈদের দিনসহ পূর্বের সাত এবং পরের পাঁচ দিন সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হবে। যাত্রীসাধারণের পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা রাখা হবে। ঈদের ছুটি শুরুর আগের দিন এবং ছুটির দিনসমূহের জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা রাখা হবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর, ফোকাল পারসন সংক্রান্ত তথ্যাদি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অবহিত করা হবে।
গরুর হাটের সুনির্দিষ্ট সীমানা ও ম্যাপ উল্লেখ পূর্বক ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে কোনো গরুর হাট ইজারা প্রদান করা হবে না। কোরবানির পশু পরিবহনকারী যানবাহন আনলোড করার জন্য এবং বিক্রয়কৃত পশু বহন করার জন্য হাটের ভিতর পৃথক পৃথক জায়গা খালি রাখা হবে। প্রতিটি গরুর হাটে ইজারাদারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থা রাখা হবে। তাছাড়া হাটের কার্যক্রম সঠিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন বা জেলা মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বাংলাদেশ পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ নিবে। উৎস: সময়নিউজটিভি।