গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশিদের জন্য মেডিকেল ভিসাসহ অন্যান্য ভিসাসেবা স্থগিত করে ভারত। সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার চীনে যাতে সহজে চিকিৎসা নেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে বেইজিংয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তির পর থেকেই বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সহজ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এবার বাংলাদেশের চীন দূতাবাস ভিসাপ্রক্রিয়া নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
চীনা দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস চীনগামী চিকিৎসা ভিসার জন্য ‘গ্রিন চ্যানেল’ চালু করেছে। গত মার্চে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরকালে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যের বাস্তবায়নে এবং জনস্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও দুই দেশের মধ্যে ব্যক্তিপর্যায়ে বিনিময় সহজ করতে বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাস চীনে চিকিৎসা ভিসার জন্য বিশেষ সুবিধা চালু করেছে।
এই সুবিধার আওতায় ডকুমেন্টেশন বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বৈধ ব্যবসায়িক লাইসেন্সধারী স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্সিগুলো চীনে চিকিৎসা নিতে ইচ্ছুক ভ্রমণকারীদের জন্য ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট ও আত্মীয়তার প্রমাণ–সংক্রান্ত গ্যারান্টি লেটার ইস্যু করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই সার্টিফিকেটগুলো সত্যায়িত করার প্রয়োজন হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এ জন্য একটি ডেডিকেটেড ‘গ্রিন চ্যানেল’ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। দূতাবাস ও ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস সেন্টার (বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে অবস্থিত প্রাসাদ ট্রেড সেন্টারের তৃতীয় তলায়) চিকিৎসা ভিসা–সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার জন্য ডেডিকেটেড হটলাইন চালু করেছে। দূতাবাসের নম্বরগুলো হলো—০২২২২২৬০১০৩,০১৭০৮৪৬৪৮০৯। ভিসা সেন্টারের নম্বর—০২২২১২৮০৩২৬১। এ ছাড়া ০১৮৮৫০৪১৩৬৪ নম্বরে একটি হোয়াটসঅ্যাপ সার্ভিস গ্রুপও খোলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, অনলাইন আবেদনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং জমা দেওয়ার পরপরই সেগুলো দ্রুত যাচাই করা হবে। ভিসা সেন্টারে মেডিকেল ভিসার জন্য একটি ডেডিকেটেড কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে আবেদনকারীরা অপেক্ষা না করে তাঁদের কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন। জরুরি মেডিকেল কেসগুলোর জন্য একটি ‘গ্রিন চ্যানেল’ সেবা পাবে এবং একই দিনে ভিসা ইস্যু করা হবে।
এ ছাড়া সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়াও সুগম করা হয়েছে। মেডিকেল ভিসার আবেদনকারীদের যাঁদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারিত আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে এবং লাইনে দাঁড়াতে হবে না। যদি স্বাস্থ্যগত কারণে সশরীরে উপস্থিত থাকা সম্ভব না হয়, তাহলে ট্রাভেল এজেন্সির গ্যারান্টি লেটারের মাধ্যমে রিমোট ইন্টারভিউ বা দূরবর্তী সাক্ষাৎকার সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
চীনা মেডিকেল প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক রোগীদের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আরও বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিককে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য চীন সফর করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কোন চীনা হাসপাতালের সঙ্গে বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সিগুলো অংশীদারত্ব স্থাপন করবে, সে বিষয়ে চীনা দূতাবাস কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। একইভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো চীনা ভিসার জন্য আবেদনকারীদের কাগজপত্র প্রস্তুত করতে সহায়তা করতে পারবে। উৎস: আজকের পত্রিকা।