শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:২৩ রাত
আপডেট : ০১ জুলাই, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বিল পরিশোধ না করায় ইউনাইটেড গ্রুপের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

মনজুর এ আজিজ : গ্যাস বিল বাবদ সরকারের পাওনা ৪৭৮ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় ঢাকা ইপিজিডে অবস্থিত ইউনাইটেড গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে পুঞ্জিভূত ওই বকেয়ার বিষয়ে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিল না দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। 

তিতাস গ্যাস সুত্র জানিয়েছে, কোম্পানিটি ২০২২ সালের দিকে একবার বকেয়া কিস্তিতে দেওয়ার বিষয়ে আবেদন করেছিল। কোর্ট তাদের বকেয়া কিস্তিতে পরিশোধ করার জন্য আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও তারা কোন টাকাই পরিশোধ করেনি।

ইউনাইটেড গ্রুপের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাসের দাম নিয়ে নজীরবিহীন পক্ষপাত দেখিয়েছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। ঢাকা ইপিজেড এলাকায় ৮৬ মেগাওয়াট ও অন্যটি চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত (৭২ মেগাওয়াট)। বিদ্যুৎ কেন্দ্র দু’টির বিষয়ে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল ইউনাইটেড। আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় আইনের উপরও ছড়ি চালিয়েছে গ্রুপটি।

কেন্দ্রটি যেহেতু সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে না তাই ক্যাপটিভ বিবেচনায় গ্যাসের দাম ঘনমিটার প্রতি ৩১.৫০ টাকা নির্ধারণ করে বিইআরসি। একই সময়ে আইপিপির (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) জন্য গ্যাসের দর ছিল ১৬ টাকা। কিন্তু আইপিপি রেটে গ্যাস পেতে তদবীর শুরু করে। রেগুলেটরি কমিশন সেই দাবি নাকচ করে দেয়, গেছেন হাইকোর্টে, সেখানে নাকচ হলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও হেরেছেন ইউনাইটেড। তারপরও সকল আইন-কানুন উপেক্ষা করে নির্বাহী আদেশে সেই চাওয়ায় পুরণ করে দিয়েছে সরকার।

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিইআরসির মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়। বিইআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল সাফ জানিয়ে দেন, আইন কোনভাবেই আইপিপি হিসেবে কভার করে না। তাই ক্যাপটিভের দরেই তাদের গ্যাসের মূল্য দিতে হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করেই আদেশ বহাল রাখে রেগুলেটরি কমিশন। কথিত রয়েছে নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে রেগুলেটরি কমিশনের দ্বন্দের সুত্রপাতও এখান থেকেই। যার রেশ ধরে বিইআরসির হাত থেকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দর নির্ধারণের প্রক্রিয়া ছিনিয়ে নেয় সরকার।

বিইআরসির তৎকালীন সদস্য (গ্যাস) মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, আমার কাছে বিষয়টি অষ্টম আশ্চার্য্য মনে হয়। কিভাবে তারা আইপিপির দর পেলো বুঝতে পারি না। তারা বিইআরসিতে এলে আমরা নাকচ করে দিই, পরে রিভিউয়ের আবেদন করে সেখানেও নাকচ হয়ে যায়। আমি যতদূর জানি হাইকোর্টও তাদের নাকচ করে দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের প্রকল্পের শুরুই হয়েছে ক্যাপটিভ হিসেবে। আইপিপি হওয়ার কোন সুযোগ দেখি না। ইউনাইটেডের পক্ষে চাপ দিতে একজন লোক এসেছিল। আমরা তাকে স্রেফ জানিয়ে দিই ভবিষ্যতে যেনো আর কখনও নাক না গলান।

বিইআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, আইনগতভাবে বিষয়টি আইপিপি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমরা সেই রায় দিয়েছিলাম। পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।

বিইআরসিতে হেরে গিয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হয় সরকারের ঘনিষ্ঠ ইউনাইটেড গ্রুপ। সেখানেও হেরে যায় তারা। তারপরও দমাবার পাত্র নন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুদ্দীন হাসান রশীদ। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে চিঠি বের করে আনেন। যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। অন্তবর্তীকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে দেওয়া পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছে। গত ৭ মার্চ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে- ইউনাইটেড গ্রুপকে ক্যাপটিভ রেটেই গ্যাসের দাম দিতে হবে। আর তারপরেই তৎপর হয়ে উঠেছে তিতাস গ্যাস। দফায় দফায় যোগাযোগ করলেও ইউনাইটেড গ্রুপ সাড়া না দেওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

ইউনাইটেড গ্রুপের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স ও প্রাইভেট সেক্রেটারি শামীম মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের কোন বিল বকেয়া নেই। তারা যে রেটে বিল দাবি করেছে সেটা অযৌক্তিক। আমাদের গ্যাস বিল আইপিপি দরেই হওয়া উচিৎ। ইপিজেডে অবস্থিত কারখানায় আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করি। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে এখন ইপিজেড বুঝুক তারা কি করবে। আমরা এখন কিছুই করতে যাচ্ছি না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়