শিরোনাম
◈ অ‌ক্টোব‌রে বাংলাদেশ সফরে ৩‌টি ক‌রে ওয়ান‌ডে ও টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌বে ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ ◈ ভুয়া ফুটবল দল সাজিয়ে জাপান-যাত্রা, ধরা পড়ে ফেরত পাঠিয়েছে ২২ জনকে! ◈ উচ্চশিক্ষার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ, সাথে আর্থিক সহায়তাও মিলবে ◈ সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ◈ আঞ্চলিক হুমকি নিয়ে ভারতের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে মৌলবাদ, চীন সীমান্ত অচলাবস্থা ও পাকিস্তানের ভূমিকা ◈ ইরানে অনুপ্রবেশ করে নারী মোসাদের দুর্ধর্ষ অভিযান (ভিডিও) ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, বরুশিয়ার নি‌শ্চিত জয় রুখে দিলো জুভেন্টাস ◈ দূর্গা পুজাতে ভারতে গেল ৮ ট্রাক ইলিশ ◈ এমবাপ্পের দুই পেনাল্টি গোলে চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লি‌গে রিয়াল মাদ্রিদের শুভ সূচনা ◈ যে কারণে শিবির ক্যাম্পাসে জিতছে, সেই কারণেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে জিততে পারে: দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২৯ রাত
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আয়তন বাড়ছে বাংলাদেশের: গত ৩৬ বছরে শুধু সন্দ্বীপের আশপাশে ভূমি বেড়েছে ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার

আশা দেখাচ্ছে বঙ্গোপসাগর। লবণাক্ত পানির বুক চিরে জেগে ওঠা চরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বাংলাদেশের আয়তন। ৩০ বছর আগে বঙ্গোপসাগরের যে জায়গা দিয়ে ভটভট করে চলত মাছ ধরা ট্রলার, সেই জায়গা দিয়েই এখন চলে ট্রাক, টেম্পো, রিকশা। উজান থেকে আসা পলি জমে তৈরি হচ্ছে দ্বীপ। গড়ে উঠছে বসতি। গত ৩৬ বছরে শুধু সন্দ্বীপের আশপাশে ভূমি বেড়েছে ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার।

গবেষণায় দেখা গেছে, মেঘনা অববাহিকা ও উপকূলজুড়ে তৈরি হয়েছে অর্ধশতাধিক দ্বীপচর। গড়ে প্রতি বছর দেশের ভূখণ্ড বেড়েছে প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার। এ ছাড়া ভাটির সময় মাথা তুলে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে ছয় শতাধিক ডুবোচর, যার মোট আয়তন ১ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্রসড্যাম, ম্যানগ্রোভ বনায়ন বা অন্য কোনো প্রযুক্তিতে ডুবোচরগুলোকে স্থায়িত্ব দিতে পারলে বড় ভূখণ্ড যুক্ত হবে দেশের মানচিত্রে। ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার ভার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটারের ক্ষুদ্র দেশটি। প্রতি বছর মানুষ বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়তি চাপ যোগ করেছে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। প্রতিনিয়ত কমছে কৃষিজমি। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা শত শত চরে আশার আলো দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল।

উপকূলজুড়ে চর জাগার বিষয়টি উঠে এসেছে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) ‘ল্যান্ড এরিয়া এক্সপানশন ইন দ্য ইস্টার্ন পার্ট অব মেঘনা এসটুয়েরি সিন্স দ্য ১৯৯০’ শীর্ষক গবেষণায়। গবেষণাটি করেছেন স্পারসোর সদস্য ড. মাহমুদুর রহমান। গবেষণায় ১৯৮৯ এবং ২০২৫ সালের স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার এবং বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সন্দ্বীপসহ আশপাশে ১৯৮৯ সালে বসবাসযোগ্য স্থায়ী ভূমি ছিল ৩২৮ বর্গকিলোমিটার, যা ২০২৫ সালে বেড়ে হয়েছে ৭২৬ বর্গকিলোমিটার। এ ছাড়া ৩৬ বছর আগে ডুবোচর ছিল ৩৩৫ বর্গকিলোমিটার, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৪১৩ বর্গকিলোমিটার।

তিন যুগ আগে যেসব স্থানে ডুবোচর ছিল, সেগুলো এখন মানুষের বসতিতে পরিণত হয়েছে। ৩৬ বছরের ব্যবধানে দেশের দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপের আয়তন ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে ডুবোচর থেকে তৈরি হয়েছে স্বর্ণদ্বীপ ও ভাসানচর। স্পারসোর স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, বর্তমানে ভাটার সময় উপকূলজুড়ে ছয় শতাধিক ডুবোচর মাথা উঁচু করে জেগে উঠছে। এগুলোর মোট আয়তন প্রায় ১ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার। সবচেয়ে বড় ডুবোচরটির আয়তন ৮৫ বর্গকিলোমিটার। এটিও সন্দ্বীপঘেঁষা। গবেষক ড. মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীব্যবস্থা দিয়ে প্রতি বছর আনুমানিক ১ হাজার ৬০ মিলিয়ন টন পলি বঙ্গোপসাগরে এসে পড়ে। বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলো হিমালয় থেকে বিপুল পরিমাণ পলি নিয়ে আসে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এই পলির কারণে বঙ্গোপসাগরের অগভীর জায়গাগুলো ধীরে ধীরে ডুবোচরে পরিণত হয় এবং পরবর্তী সময়ে তা বিস্তৃত ভূখণ্ডে রূপ নেয়। আবার কিছু ডুবোচর হারিয়ে যায়। তবে সঠিক পরিকল্পনা নিলে ডুবোচরগুলোকে স্থায়ী দ্বীপে পরিণত করা যায়। বন বিভাগ কিছু ডুবোচরে কেওড়া বনায়ন করায় সেগুলো স্থায়িত্ব পেয়েছে। এই পদ্ধতিতে খরচ নেই বললে চলে। এ ছাড়া ক্রসড্যামসহ আরও অনেক আধুনিক প্রযুক্তি আছে। নেদারল্যান্ডস ক্রসড্যাম দিয়ে প্রচুর ভূমি তৈরি করেছে।

সন্দ্বীপ-উড়িরচর-নোয়াখালী ক্রস বাঁধের ওপর ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের (এলআরপি) এক সমীক্ষায় (১৯৮৭) দেখা গেছে যে, ক্রস বাঁধটি অদূরভবিষ্যতে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর নতুন জমি এবং ৩০ বছরের মধ্যে আরও ১৮ হাজার হেক্টর জমির জন্ম দেবে, যা ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষকে সরাসরি উপকৃত করবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নদীগুলো দিয়ে দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পলি আসে। এর বড় একটা অংশ বঙ্গোপসাগরের গভীরে হারিয়ে যায়। ক্রসড্যাম দিয়ে পলিগুলো পরিকল্পিতভাবে আটকাতে পারলে উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর ভূমি তৈরি করা সম্ভব। নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রটি তৈরি হয়েছে ক্রসড্যাম দিয়ে ছোট ছোট চর ভরে। তবে ক্রসড্যাম ব্যয়বহুল। দ্রুত ভূমি বাড়াতে চাইলে এটাই পথ। ম্যানগ্রোভ বনায়ন করেও কম খরচে চরের স্থায়িত্ব দেওয়া যায়। উৎস: বিডি-প্রতিদিন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়