শিরোনাম
◈ কলকাতায় ভাঙচুরের ঘটনায় লিওনেল মেসি দায়ী: সু‌নিল গাভাস্কার ◈ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের আমানত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ গভর্নরের ◈ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ছাড়া ভারত বিজয় অর্জন করতে পারতো না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ◈ সৌদিতে হলরুম ভাড়া করে নির্বাচনী সভা করায় কয়েকজন বাংলাদেশি আটক ◈ ৩০০ আসনের লড়াই: আসন ছাড়ে অনীহা, জোট রাজনীতিতে বাড়ছে টানাপোড়েন ◈ হাদিকে গুলি: প্রধান অভিযুক্তের ‘জামিন বিতর্ক’ নিয়ে যা বললেন আইন উপদেষ্টা ◈ পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন ◈ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ট্রাভেল পাস চাননি তারেক রহমান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে লন্ডন গেলেন জামায়াত আমির ◈ সরকারি গাড়িতে যুগ্ম সচিবকে জিম্মি, ৬ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টা

প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:৪২ দুপুর
আপডেট : ০৬ মে, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : মাসুদ আলম

ডিবি পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, চক্রের ১২ সদস্য গ্রেফতার

মাসুদ আলম: রাজধানীর ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে ডিবি পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ১২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ মঞ্জু (৪০),  সাইফুল ইসলাম (৪০),  মোঃ রাসেল (২৮),  মোঃ জাহিদ (২৪),  মোঃ জাকির প্রকাশ তৌহিদ (৪০),  মোঃ ইসমাইল হোসেন (৩৩), মোঃ হিরা শেখ (৩৫),  মো: রফিক (৩৫),  মোঃ বাধন (৩০), চাঁন মিয়া (৫৪),  বেল্লাল চাকলাদার (৪৫) ও  মোঃ আসলাম খাঁন (৪৫)।

সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, মোঃ আব্দুল কাদের পেশায় একজন ট্রাক ব্যবসায়ী। তার মালিকানাধীন চারটি ট্রাক রয়েছে। গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায়  তার ট্রাক ড্রাইভার মোঃ নয়ন ও হেলপার মোঃ জামিরুল ইসলাম পাম অয়েল বোঝাই ৬০টি ড্রাম ট্রাকে নিয়ে চট্টগ্রাম হতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার উদ্দেশে রওনা করে। পথিমধ্যে গত ৩ জানুয়ারি  রাত সাড়ে ৩ টায় ধানমন্ডি মডেল থানাধীন মিরপুর রোডস্থ হোটেল আড্ডা এর সামনে  ৭-৮ জনের একটি ডাকাত দল দুটি  মাইক্রোবাস যোগে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গতিরোধ করে সিগন্যাল দিয়ে ট্রাকটি আটকায়। অতঃপর মাইক্রোবাস হতে দুইজন ব্যক্তি লেজার লাইট ও ওয়াকিটকিসহ সাদা পোশাকে নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকের কাগজপত্র দেখতে চায়। অতঃপর জোরপূর্বক পিস্তল ঠেকিয়ে ড্রাইভার হেলপারসহ তেলবাহী ট্রাকটি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। পরে ড্রাইভার ও হেলপারকে জোর পূর্বক চেতনা নাশক ঔষধ সেবন করিয়ে হাত ও চোখ বেঁধে কেরানীগঞ্জের রসুলপুর এলাকায় ফেলে দেয়। এ ঘটনার ট্রাক ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বাদী হয়ে গত ৭ জানুয়ারি  অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের  বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় একটি ডাকাতির মামলা দায়ের করেন। 

তিনি আরও বলেন,  মামলার ঘটনার ১৯ দিন পর গত ২২ জানুয়ারি  রাত ৩ টায় সময় একই কায়দায় ডাকাত দল মোহাম্মদপুর থানাধীন রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ গেইটের সামনে থেকে ৭৫ ড্রাম সয়াবিন তেল বোঝাই একটি ট্রাক ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ সংক্রান্তে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা  করা হয়।

মামলা তদন্তকালে ধানমন্ডি মডেল থানার একাধিক চৌকস দল গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ মঞ্জু, সাইফুল ইসলাম, মোঃ রাসেল ও জাহিদকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ ফেব্রুয়ারি  ডাকাতির মূল হোতা মোঃ জাকির প্রকাশ তৌহিদ কে ঢাকার কেরানীগঞ্জ আরশি নগর হতে, মোঃ ইসমাইল হোসেন, মোঃ হিরা শেখ, মো: রফিক কে ঢাকা কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর হতে, মোঃ বাধনকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পানগাঁও হতে, চাঁন মিয়াকে মহাখালী এলাকা হতে, বেল্লাল চাকলাদারকে ঢাকার শনির আখড়া হতে এবং মোঃ আসলাম খাঁনকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত মোঃ আসলাম খাঁন এর স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে তার মুন্সিগঞ্জের বিসিক এলাকার গোডাউন হতে ১০ টি তেল ভর্তি ড্রাম যার ওজন ১৮৫০ কেজি ও বাজার মূল্য আনুমানিক দুই লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং ৩৬ টি খালি তেলের ড্রাম উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। এছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা নোহা গাড়ি, একাধিক বাটন ফোন ও একটি লুন্ঠিত  ট্রাক উদ্ধার করা হয়।

ডিসি বলেন,  গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডাকাতদলের মূল হোতা মো: জাকির প্রকাশ তৌহিদ এর বিরুদ্ধে ১০টি, মো: জাহিদ এর বিরুদ্ধে আটটি, মোঃ হিরা শেখ ও রফিক এর বিরুদ্ধে ছয়টি করে, মো: মঞ্জুরের বিরুদ্ধে পাঁচটি, মো: চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি ও মো: বেল্লাল চাকলাদারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। 

গ্রেফতারকৃতরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।  তাদের বাড়ী দেশের বিভিন্ন জেলায়। ডাকাতির পূর্বে নিদিষ্ট জায়গায় একত্রিত হয়। তারা ডাকাতির সময় সাধারণত বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ডাকাতি শেষে মোবাইল ফোন সীমসহ ফেলে দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যায়। 

উক্ত ডাকাতির সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারসহ আরো লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ বেলাল চাকলাদার মতিঝিল ৯নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সক্রিয় নেতা। তার নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি ও  উত্তরা পশ্চিম থানায় আরেকটি  হত্যা মামলা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়