খুররম জামান: [২] দুই দিনের সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। কাতারের আমিরের সফরে দুই দেশের মধ্যে ১১টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে। রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
[৩] তিনি জানান, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে কাতারের মহামহিম আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ হতে এটি প্রথম উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর। বাংলাদেশ ও কাতারের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সরকারকালীন সময়ে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র।
[৪] প্রধানমন্ত্রীর বিগত ২০২৩ এর মার্চ ও মে মাসে দুইবার কাতার সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় অবস্থানে উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের আমির বাংলাদেশে সফর করবেন। সাম্প্রতিককালে কাতারের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, জ্বালানী, বিমান চলাচল, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
[৫] কাতারের আমির ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে ঢাকায় আসবেন। রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরকে বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে স্বাগত জানাবেন। এরপর গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। পরের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ। গণভবনে ০৬টি চুক্তি ও ০৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গভবনের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজনে অংশগ্রহণ। সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
[৬] পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ ঢাকার একটি সড়কের নামকরণ কাতারের মহামহিম আমিরের নামে করার কার্যক্রম চলছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালসী উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি আমিরের নামে নামকরণ করা হবে। আগামী ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় কাতারের মহামহিম আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এই দুটি স্থাপনা উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
[৭] তিনি জানান, এ সফরের ১১টি দ্বিপক্ষীয় দলিল স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। (৬টি চুক্তি এবং এটি সমঝোতা স্মারক) দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগীতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি, উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দু'দেশের মধ্যকার দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি, যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগীতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, কুটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগীতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
কেজে/এসসি/একে
