মানবজীবনে সুখ-দুঃখ, প্রাচুর্য ও অভাব—সবই আল্লাহর পরীক্ষা। কখনো আল্লাহ তাআলা ধনসম্পদ ও নিয়ামতের প্রাচুর্য দান করেন, আবার কখনো অভাব-অনটন ও সংকটে মানুষকে পরীক্ষা করেন। দুর্বল ইমানদার মানুষ বিপদে ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে, কিন্তু মুমিনেরা প্রতিটি অবস্থায় আল্লাহর ওপর ভরসা করে এবং তাঁরই কাছে মুক্তি প্রার্থনা করে।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের নিয়ামত বাড়িয়ে দেব, আর অকৃতজ্ঞ হলে আমার শাস্তি হবে কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
রিজিকের মালিক কেবল আল্লাহ। তিনি চান তো সীমাহীন রিজিক দান করেন, আর চান তো অভাবের মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। তাই অভাব-অনটনের সময় হতাশ হওয়া যাবে না; বরং আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে চেষ্টা ও দোয়া অব্যাহত রাখতে হবে।
হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং অভাব দূর করে দেব।’ (জামে তিরমিজি)
দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য দোয়া পড়া উত্তম আমল। যেমন, হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল ফাকরি, ওয়াল কিল্লাতি, ওয়াজ্জিল্লাতি, ওয়া আউজুবিকা মিন আন আজলিমা আও উজলামা।’ (সহিহ বুখারি: ১৫৪৪)
অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দারিদ্র্য, কমতি ও অসম্মান থেকে। আবার আশ্রয় চাই, কাউকে জুলুম করা থেকে বা কারও দ্বারা জুলুমের শিকার হওয়া থেকে।
এ ছাড়া সাইয়েদুল ইস্তিগফার নিয়মিত পাঠ করা অভাব দূর হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় এটি পড়ে এবং মারা যায়, সে জান্নাতি হবে।’ (সহিহ বুখারি)
অভাব-অনটন ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে রাসুল (সা.) সর্বদা আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। যেমন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা থেকে, কেননা তা নিকৃষ্ট সঙ্গী।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪৭)
সর্বশেষ, নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করাও অভাব-অনটন দূর হওয়ার অন্যতম আমল। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি তোমাদের বাড়িয়ে দেব।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের রিজিকে বরকত দিন, বিপদ-আপদ ও অভাব-অনটন থেকে হেফাজত করুন। সূত্র: আজকের পত্রিকা