শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] গেল ঈদের ছুটিতে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত ছিলো হাজারো বিড়ম্বনা। তবুও স্বজনদের সান্নিধ্য পেতে বাড়ি ফেরার ব্যাকুলতা আর উচ্ছ্বাস বলে দিয়েছিল ঘরে ফেরার আনন্দ কতটা, শেকড়ের টান কতটা কাছে টানে। শত বিড়ম্বনা-ভোগান্তি উপেক্ষা করে রাজধানীবাসি যেমনি বাড়ি গিয়েছিলেন, তেমনি ছুটি শেষে ফিরছেন কাজেও।
[৩] এই মানুষগুলো ছাড়াও প্রাণের শহর ঢাকায় আরও এক শ্রেণীর মানুষ ছিল, যাদের ভাগ্যে মেলেনি ঈদের ছুটি, কিংবা ভিন্ন কারণে যেতে পারেননি। ফলে পরিবার ছাড়া তাদের ঈদ কাটাতে হয়েছে ঢাকায়। আর এসব মানুষের কিছু অংশ এখন বাড়ি যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য, ঈদ শেষ হলেও অন্তত পরিবারের সঙ্গে কিছু ভালো সময় কাটানো।
[৪] বুধবার রাজধানীর বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন, লঞ্চ ঘাট ঘুরে এসব যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অধিকাংশই ঈদে ছুটি পাননি। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি। কর্মস্থলের অন্য সহকর্মীরা কাজে যোগদান করায় ছুটি মিলেছে। তাই তারা এখন গ্রামে যাচ্ছেন। ঈদের ছুটির পর ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা একেবারেই কম নয়। রাজধানী ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস, ট্রেন গুলোতে প্রচুর যাত্রী দেখা গেছে।
[৫] রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য এনা বাসের টিকিট কেটেছেন খোরশেদ আলম নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি তার দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। আলাপকালে খোরশেদ আলম বলেন, ‘একটি অনলাইন কেনাকাটার প্রতিষ্ঠানে আমি চাকরি করি। ঈদের সময় প্রচুর চাপ থাকার কারণে আমি এবার ঈদে ছুটি পাইনি। যে কারণে আজ (বুধবার) পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছি। ঈদে বাড়ি না গেলে একটা অপূর্ণতা কাজ করে, সবারই তো গ্রামের বাড়ির প্রতি টান থাকে। তাই আজ থেকে পাঁচ দিনের ছুটি কাটাতে বাড়ি যাচ্ছি। আমার মত অনেক মানুষই বাস টার্মিনালে এসেছেন, পুরো বাস টার্মিনাল যাত্রীতে ভরা। এসব মানুষও হয়তো ঈদের ছুটি পায়নি, যে কারণে তারা আমার মত আজ বাড়ি ফিরছে।’
[৬] কমলাপুর থেকে দুপুরের রাজশাহীর ট্রেনের টিকিট কেটেছেন জাহিদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার পরিবারসহ রাজশাহীর গ্রামের বাড়িতে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমার দোকানের সকল কর্মচারীকে ছুটি দিয়েছিলাম। মহল্লার ভেতরে দোকান। একদম বন্ধতো রাখতে পারিনা। তাই আমার বাড়ি যাওয়া হয়নি। এখন কর্মচারীরা চলে এসেছে। তাই আমি বাড়ি যাচ্ছি।’
[৭] চট্টগ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, ‘ঈদে ছুটি পাইনি। ফলে বাড়িতেও যাওয়া হয়নি। সহকর্মীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তাই আজ থেকে ছুটি পেলাম। ঈদ তো একা একা কাটালাম, তাই এখন বাড়ি যাচ্ছি। পরিবার নিয়ে কয়েকদিন সময় কাটাবো।’
[৮] বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়া এসব যাত্রীদের ট্রেনের টিকিট পেতে তেমন একটা কষ্ট করতে হচ্ছে না। যাত্রী কম থাকায় অনলাইন অথবা সরাসরি স্টেশনে এসে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া এসব ট্রেন, বাসে ভিড়ও কম।
[৯] এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, এখনো অনেকে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছেন। নিয়মিত ট্রেনগুলো চলছে। অনলাইন এবং সরাসরি কাউন্টার থেকে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :