শিরোনাম
◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩

প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৩:৩৮ দুপুর
আপডেট : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৪:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ধারণার চেয়ে কিছুটা কম, বলছে আইএমএফ 

রাশিদুল ইসলাম: ক্রমবর্ধমান সুদের হার, মূল্যস্ফীতি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছে তাতে এই সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। তবে অর্থনীতিবিদরা কয়েক মাস আগের চেয়ে এখন বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে অনেক বেশি আশাবাদী। আরটি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ সোমবার বলেছে যে তারা এখন আশা করছে যে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ২০২২-এর ৩.৪% থেকে ২০২৩-এ ২.৯% হবে। যা গত অক্টোবরে ২.৭% পূর্বাভাস থেকে বেশি। এ দৃষ্টিভঙ্গিতে চীনে করোনা লকডাউন হঠাৎ প্রত্যাহার কিছুটা আশার আলো সঞ্চার করেছে। যা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়ক হয়ে উঠেছে। এটি ২০২২ সালের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনীতিতে অপ্রত্যাশিত স্থিতিস্থাপকতার পাশাপাশি বৈশ্বিক আর্থিক অবস্থার উন্নতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মুদ্রাস্ফীতি সহজ হতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে মার্কিন ডলারের ব্যাপক চাহিদা কিছুটা নেমে এসেছে। 

আইএমএফ’এর গবেষণা পরিচালক পিয়েরে-অলিভিয়ের গৌরিঞ্চাস একটি ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, গত অক্টোবরের পূর্বাভাসের তুলনায় দৃষ্টিভঙ্গি কম বিষণ্ণ, এবং প্রবৃদ্ধির তলানিতে এবং মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের সাথে একটি টার্নিং পয়েন্টের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, কয়েক দশকের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের আক্রমণাত্মক প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে, যার ফলে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ গতি ফিরে পাবে। আইএমএফ এও বলছে যে দশটি উন্নত অর্থনীতির দেশের মধ্যে  নয়টির প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রবৃদ্ধি ২০২২ সালে ২% থেকে ২০২৩ সালে ১.৪% হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউরোপ - যার অর্থনীতি অঞ্চলের শক্তি সঙ্কট সত্ত্বেও আশ্চর্যজনকভাবে শক্ত প্রমাণিত হয়েছে, আংশিকভাবে এখন পর্যন্ত হালকা শীতের কারণে - বৃদ্ধি দেখার পূর্বাভাস রয়েছে ২০ টি দেশের মধ্যে যারা ইউরো ব্যবহার করে তাদের প্রবৃদ্ধি ৩.৫% থেকে ০.৭% এ নেমে এসেছে। যুক্তরাজ্য তার প্রবৃদ্ধিতে ০.৬% সংকোচন অনুভব করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তার মানে জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি এই বছর আরো সঙ্কুচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবুও, আইএমএফ’র দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ^ অর্থনীতির কিছু উন্নতি দেখছে তার বড় কারণ চীন। বেইজিং গত বছরের শেষের দিকে তার কঠোর ‘শূন্য কোভিড’ নীতি প্রত্যাহার করে নেয়। চীন তার সীমান্ত বিদেশিদের জন্যে আবার খুলেছে এবং কঠোর কোয়ারেন্টাইন এবং পরীক্ষার নীতিগুলি থেকে দূরে সরে গেছে যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বৃদ্ধিকে আটকে রেখেছিল। ২০২২ সালে এর ৩% সম্প্রসারণ ছিল কয়েক দশকের মধ্যে দেশের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্সের একটি। আইএমএফ এখন পূর্বাভাস দিয়েছে যে চীনে প্রবৃদ্ধি এই বছর ৫.২%-এ প্রত্যাবর্তন করবে, যা তার আগের অনুমানের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

এছাড়া মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতাও আশাব্যঞ্জক। আইএমএফ উল্লেখ করেছে যে ‘সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি এখন বেশির ভাগ দেশে কমছে,’ এমনকি অনেক ক্ষেত্রে খাদ্য ও জালানি শক্তি ব্যতীত পণ্য ও পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি এখনও শীর্ষে না থাকলেও মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির হার গত জুন মাসে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে, এর পাশাপাশি ইউরোপে মুদ্রাস্ফীতি অক্টোবর থেকে কমেছে এবং তবুও এটি রেকর্ড স্পর্শ করেছে।

বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি ২০২২-তে ৮.৮% থেকে ২০২৩-এ ৬.৬% এবং ২০২৪-এ ৪.৩%-এ নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কোভিড মহামারীর আগে, এটি ছিল ৩.৫%-এর কাছাকাছি। গত নভেম্বর থেকে মার্কিন ডলারের শক্তিতে কিছুটা অবমূল্যায়ন উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য সহায়ক হয়েছে। গ্রিনব্যাকের দাম চড়ে যাওয়ায় খাদ্য এবং জালানি শক্তি সহ পণ্য আমদানি করা আরও ব্যয়বহুল করে তুলেছে এবং কিছু ঋণের সুদ পরিশোধের খরচ বাড়িয়েছে।
তবে এখনো ঝুঁকি যথেষ্ট রয়ে গেছে, আইএমএফ সতর্ক করে বলছে চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ফের খেই হারাতে পারে যদি ভবিষ্যতে করোনভাইরাস তরঙ্গ দেশটিতে মানুষকে ঘরে রাখতে বাধ্য করে। মুদ্রাস্ফীতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারণার চেয়ে বেশি সময় ধরে উচ্চতর থাকতে পারে যদি বেইজিং কঠোর মুদ্রানীতি বাধ্যতামূলক করে। ইউক্রেনের যুদ্ধ অনিশ্চয়তার মূল উৎস। এ যুদ্ধ খাদ্য ও জালানি শক্তির বাজারে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

তারপরও আইএমএফ’র বিশ্লেষক গৌরিঞ্চাস বলেছেন, অর্থনৈতিক ট্রেন্ড ভাল খবর, কিন্তু যথেষ্ট নয়। টেকসই প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীল মূল্য এবং সবার জন্য অগ্রগতি সহ সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের রাস্তাটি কেবল শুরু হচ্ছে। তারপরও ব্রিটেনকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল প্রধান অর্থনীতির দেশ হিসেবে মনে করছে আইএমএফ। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়