উত্তরপ্রদেশের মীরাটে বাসর রাতেই নববধূকে ফেলে উধাও হওয়া বরকে পাঁচ দিন পর হরিদ্বার থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় মীরাটের মহম্মদ মহসিন ওরফে মনুর। আত্মীয়স্বজন, বরযাত্রী, ভোজ—সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশেই শেষ হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। রাতে বাসর ঘরে নববধূ অপেক্ষায় থাকলেও মহসিন ছিলেন অস্বাভাবিক আচরণে অস্থির।
নববধূ জানান, রাত ১২টার দিকে বাসর ঘরে ঢোকেন মহসিন। তিনি আলোটা কমিয়ে নাইট ল্যাম্প জ্বালাতে বললে আচমকাই নার্ভাস হয়ে পড়েন বর। কিছুক্ষণ দাঁড়াতে বলেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে যান—এরপর আর ফেরেননি।
বরের হদিশ না পেয়ে নববধূ প্রথমে নিজেই খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে পুরো বাড়ি ও আশপাশ তন্নতন্ন করে খোঁজেন। রাতভর চেষ্টা ব্যর্থ হলে পরিবার পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করে।
পুলিশ তদন্তে নামে এবং সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—বাড়ির পাশের খালের ধার ধরে হেঁটে যাচ্ছেন মহসিন। পুলিশ ডুবুরি নামালেও তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অবশেষে পাঁচ দিন পর মহসিনের বাবা আবু সৈয়দের ফোন নম্বরে কল আসে। কলের অপর প্রান্তে ছিলেন নিজে মহসিন। জানান, তিনি হরিদ্বারে অবস্থান করছেন এবং পরিবারের কাউকে পাঠাতে বলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা হরিদ্বারে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। গঙ্গার ধারের একটি গেস্টহাউসেই ছিলেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে মহসিন জানান, বিয়ে নিয়ে তিনি প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন। নববধূ নাইট ল্যাম্প আনতে বলাতেই ‘বেরিয়ে যাওয়ার অজুহাত’ পান। এরপর নদীর ধারে রাত কাটিয়ে সকালে বাস যোগে হরিদ্বার চলে যান। তাঁর ভাষায়, “ভয় লাগছিল, সবকিছু মাথার ওপর চাপ মনে হচ্ছিল। পরে বাড়ির কথা মনে পড়ায় ফোন করি।”
পরিবার ও স্থানীয়দের স্বস্তি—পাঁচ দিন পর হলেও মহসিনকে জীবিত অবস্থায় ফেরত পাওয়া গেছে। পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।