ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে চলমান পুলিশি অভিযানে দুদিনে অন্তত ১৩২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রিওর প্রসিকিউটর কার্যালয় থেকে বুধবার (২৯ অক্টোবর) এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, 'রেড কমান্ড' নামের এক অপরাধচক্র দমন করতে এই অভিযান শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিওর বিভিন্ন বস্তি এলাকায় দলটি তাদের আধিপত্য বৃদ্ধি করছিল।
ভারী অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য মঙ্গলবার শুরু হওয়া অভিযানে যোগ দেন। তাদের সহায়তার জন্য আর্মার্ড ভেহিকেল, হেলিকপ্টার এবং ড্রোন মোতায়েন করা হয়। রিওর উত্তরাঞ্চলে দুটি দরিদ্র এলাকায় (ফাভেলা) মূলত ওই অভিযান সীমাবদ্ধ রাখা হয়। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় মাদক কারবারি চক্রের মূল ঘাঁটি ওই অঞ্চলেই রয়েছে।
কমপ্লেক্সো দা পেনিইয়া এবং কমপ্লেক্সো দো আলেমাওতে পরিচালিত অভিযানকে রিওর ইতিহাসে বৃহত্তম বলে উল্লেখ করেছেন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্লদিও ক্যাস্ত্রো।
চলমান অভিযানে রিওর বিভিন্ন সড়কে মরদেহের স্তূপ জমে উঠতে দেখা যায়। এসময় শহরের রাস্তায় রাস্তায় শোনা যাচ্ছিল স্বজনহারাদের আহাজারি। মঙ্গলবার রিও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। অভিযান শুরুর কয়েকঘণ্টা পরও শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।
অপরাধীরা ড্রোন ব্যবহার করে পালটা বোমা নিক্ষেপ শুরু করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দিশেহারা হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন স্থানীয়রা।
অভিযানের প্রথম দিনে অন্তত ৬০ সন্দেহভাজন অপরাধী নিহত হওয়ার দাবি করেছেন ক্যাস্ত্রো। তার প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, অভিযানে অন্তত চার পুলিশ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন।
গত বছর রিওতে পরিচালিত পুলিশি অভিযানে কেবল দুদিনেই প্রায় সাতশ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
ফাভেলাতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে ২০২০ সালে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল ব্রাজিলের আদালত। ওই আদেশ অনুযায়ী, হেলিকপ্টার ব্যবহার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশেপাশে অভিযান পরিচালনা নিষিদ্ধ ছিল।
তবে, সব বিধিনিষেধ চলতি বছর প্রত্যাহার করে নিয়েছে আদালত।
মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে চলমান অভিযানের নিন্দা জানানো হয়েছে। তাদের বক্তব্য, অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে এসব পুলিশি অভিযান মোটেই কার্যকর নয়। তথ্যসূত্র: এএফপি, রয়টার্স