ক্যালিফোর্নিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৩০ বছর বয়সী ভারতীয় আইটি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন। পুলিশের দাবি, তিনি ছুরি হাতে রুমমেটকে আক্রমণ করেছিলেন। তবে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, ঘটনাটির পেছনে বর্ণবৈষম্য রয়েছে এবং তারা বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ৩ সেপ্টেম্বর সান্তা ক্লারার নিজ বাসায় ছুরি হাতে নিজামুদ্দিনকে পাওয়া যায়। তখন তিনি রুমমেটকে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছিলেন এবং রুমমেটের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। ৯১১ কল পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ গুলি চালায়। হাসপাতালে নেয়ার পর নিজামুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আহত রুমমেট চিকিৎসাধীন। খবর এনডিটিভির।
সান্তা ক্লারা কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস ও পুলিশ বিভাগ যৌথ তদন্ত করছে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে নিহতের পরিবার দাবি করেছে, তিনিই নাকি পুলিশকে ডেকেছিলেন সাহায্যের জন্য, অথচ তাকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, নিজামুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বর্ণবাদী হয়রানি, মজুরি প্রতারণা এবং চাকরি থেকে অন্যায়ভাবে বরখাস্তের শিকার হয়েছিলেন।
নিজামুদ্দিন ফ্লোরিডায় কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স শেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি টেক কোম্পানিতে কাজ করছিলেন। তিনি শান্ত-স্বভাবের ধর্মপরায়ণ মানুষ ছিলেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
তার লিঙ্কডইনে করা এক পোস্টে নিজামুদ্দিন লিখেছিলেন, ‘আমি বর্ণবাদী ঘৃণা, বৈষম্য, হয়রানি, নির্যাতন, মজুরি প্রতারণা, অন্যায় বরখাস্ত এবং ন্যায়বিচারে বাধার শিকার হয়েছি। যথেষ্ট হয়েছে, এই শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ/বর্ণবাদী মানসিকতার অবসান ঘটাতে হবে।’
নিহতের মরদেহ এখনো সান্তা ক্লারার একটি হাসপাতালে রাখা আছে। পরিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে।
মজলিস বচাও তেহরিক (এমবিটি)–এর মুখপাত্র আমজেদ উল্লাহ খান নিহতের বাবার সঙ্গে সাক্ষাতের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাস ও সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত ও মরদেহ ফিরিয়ে আনার আনুষ্ঠানিকতায় সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছেন।