ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস বলেছে, বিহারে 'মৃত বলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া' সাত ভোটারের সঙ্গে দেখা করেছেন দলনেতা রাহুল গান্ধী।
এর আগে তিনি দেশটির নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে 'ভোট চুরি'-র অভিযোগ করে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন অভিযান করেছিলেন।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাহুল বিহারের ভোটার তালিকায় মৃত বলে নাম বাদ পড়া সাতজন ভোটারের সঙ্গে নিজের বাসভবনে চা খেয়েছেন, আলোচনা করছেন। কংগ্রেসের তরফ থেকে সেই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। রাহুল নিজেও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, চারজন নারী ও তিনজন পুরুষ ভোটারের সঙ্গে কথা বলছেন রাহুল। তাদের হাতে চা তুলে দিচ্ছেন। সকলে মিলে চা পান করছেন। তার আগে সকলের সঙ্গে কথাও বলেছেন রাহুল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাহুল তাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজের অফিস ঘরে নিয়ে যান। লম্বা টেবিলের চারপাশে তারা বসেন। রাহুল প্রশ্ন করেন, 'শুনলাম আপনারা আর বেঁচেই নেই।
এর জবাবে একজন জানালেন, আমাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রাহুলের প্রশ্ন, কীভাবে জানতে পারলেন?' জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, 'ভোটার তালিকা পরীক্ষা করে দেখলাম।
ভিডিওতে রাম ইকবাল রায়ের একটি ভোটার কার্ড দেখানো হয়েছে। ১৯৫৯ সালে জন্মানো রাম ইকবালের বাবার নাম সেখানে আছে লক্ষ্মী রায়।
এরপর রাহুল বলেন, আপনারা ভোটার তালিকা পরীক্ষা করে দেখলেন, আপনাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আপনাদের মেরে ফেলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আপনাদের মেরে ফেললো? আপনাদের কী মনে হয়, এরকম কত মানুষ আছেন?
একজন জবাব দেন, একটা পঞ্চায়েত এলাকায় অন্তত ৫০ মানুষের এই হাল হয়েছে।
রাহুলের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, তারা সকলে একই বুথের ভোটার নন, তারা তিন-চারটি আলাদা আলাদা বুথের ভোটার ছিলেন। সেখানে আরো এরকম মানুষ আছেন, যাদের নাম এইভাবে বাদ পড়েছে।
একজন জানান, তার বাড়িতে কমিশনের কর্মীরা এসেছিলেন। তার কাছ থেকে নথি চেয়েছিলেন। তিনি আধার কার্ড, ব্যাংকের পাসবইয়ের ফটো কপি এবং ছবি দিয়ে এসেছিলেন। কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ঠিক আছে। তারপর দেখেন তাকে মৃত ঘোষণা করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, তারা বিহারের সাবেক উপ মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের কেন্দ্র রাঘোপুরের ভোটদাতা।
তাদের মধ্যে একজন বলেছেন, মহাজোট মিলে বিহারকে বাঁচাক। রাহুল তার জবাবে বলেন, আরজেডি ও আমাদের দল মিলে এটা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। তারপর তিনি বলেন, বন্ধ করে দেব, বন্ধ করে দেব। ভোট চুরি হতে দেব না।
এরপর রাহুল এই ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছেন, জীবনে কখনো মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি। এই অনুভবের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গত ৭ অগাস্ট রাহুল গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ আনেন। নির্বাচন কমিশন রাহুলের কাছ থেকে এই বিষয়ে নথি চেয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছে।
কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) গত রোববার ভোট চুরির নিয়ে অভিযোগের তদন্ত করার জন্য রাহুল গান্ধীর কাছ থেকে নথিপত্র চেয়েছেন।