শিরোনাম
◈ শৈলকুপায় ব্যবসায়ীর পায়ের রগ কর্তন ◈ রবীন্দ্র শিক্ষার্থীদের যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে ব্লকেড, যানচলাচল বন্ধ ◈ স্বর্ণ পাচার করতে গিয়ে ধরা পরা সেই কেবিন ক্রু রুদাবা সুলতানাকে সাময়িক বরখাস্ত ◈ হজ ওমরা নিয়ে আমার মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা যদি এক টাকাও ঘুষ খেলে ফাঁসিতে ঝোলাব: ধর্ম উপদেষ্টা ◈ ক্লোরেটের মাত্রা বেশি, যুক্তরাজ্যে আবারও বাজার থেকে তুলে নেওয়া হলো কোকা-কোলার পণ্য ◈ করাচিতে স্বাধীনতা দিবসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে নিহত ৩, আহত ৬৪ ◈ এবার ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে যা বলল সৌদি আরব! ◈ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের এপিএস গ্রেফতার ◈ সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, সাগরে লঘুচাপ ◈ ‘মৃত ভোটারদের’ সঙ্গে চা পান করলেন রাহুল গান্ধী,তোলপাড়

প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:৪৬ সকাল
আপডেট : ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক দায়মুক্তি দেয় আ’লীগ সরকার

গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিগত সরকারের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত ছিল বলে মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ব্যাপক দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ঘটনার শাস্তির আওতায় আনতে সরকারটি খুব কমই বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িতদের আটক করেছে।

এতে বলা হয়, গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিগত সরকারের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত ছিল বলে মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে জাতিসঙ্ঘের সাথে কাজ করেছে। একই সাথে এ সরকার বাংলাদেশের সাধারণ বিচার পদ্ধতি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে কাজে লাগিয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০২৪ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জাতিসঙ্ঘের সব সদস্য রাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা গ্রহণকারী দেশগুলোর ওপর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর প্রতি বছর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা অ্যাক্ট ১৯৬১ এবং ট্রেড অ্যাক্ট ১৯৭৪ এর আওতায় প্রতিবেদনটি মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে গত বছর শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ এবং ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। জুলাই ও আগস্টের কয়েক সপ্তাহের ওই আন্দোলনে কয়েক শ’ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর তিন দিন পর ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগস্টে কিছু ঘটনার পর বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। অবশ্য এখনো বেশ কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ রয়েছে।

এতে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নির্বিচার বা বেআইনি হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি, নির্বিচার গ্রেফতার, বিদেশে থাকা সমালোচকদের সরকারিভাবে হয়রানি, মতপ্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার বা বিচার এবং সেন্সরশিপ, শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ, শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি বা শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হুমকি এবং গুরুতর মাত্রায় শিশুশ্রম বিদ্যমান থাকা। বিগত সরকার সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিরূপ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অন্যান্য দেশগুলোর ওপর দ্বিপক্ষীয় চাপ সৃষ্টির প্রয়াস চালিয়েছে, যা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। গত বছরের জুলাইতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিল করায় আমিরাত কর্তৃপক্ষ নির্বিচারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আটক করেছিল। এর মধ্যে ৫৭ জনকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরক

প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ছাত্রলীগের সদস্যরা সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সরকার ও শাসক দল একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এ সময়ে সাংবাদিকরা গ্রেফতার, বিচারপূর্ব আটক, ফৌজদারি বিচার, জরিমানা ও কারাদণ্ডসহ নানাবিধ হুমকির মুখে ছিলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর আগস্টে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

স্বাধীন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম অভিযোগ তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সরকারি বিজ্ঞাপন আটকে রেখে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিজ্ঞাপন না দিতে চাপ দিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করত। যেসব গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করত বা রাজনৈতিক বিরোধীদের কার্যক্রম ও বক্তব্য প্রচার করত তাদের বিরুদ্ধে ওই সরকার এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিত। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আগের সরকারের সময়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সীমাবদ্ধ। গণমাধ্যমের সদস্যরা এবং ব্লগাররা সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্রে হয়রানি ও প্রতিশোধের আশঙ্কায় নিজেরাই সেন্সরশিপ আরোপ করতেন। সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করে, সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর অধীনে কমপক্ষে এক হাজার ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হবে। অক্টোবর ও নভেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পূর্ববর্তী সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের সাথে যুক্ত ১৬৭ জন সাংবাদিকের পরিচয়পত্র (অ্যাক্রেডিটেশন) বাতিল করে। অ্যাক্রেডিটেশন ছাড়া সাংবাদিকরা সংবাদমাধ্যমে লিখতে পারলেও সচিবালয়ে বা মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করতে পারেন না। ফলে তারা সচিবালয়ের ভেতরে অনুষ্ঠিত সরকারি অ

মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তাদের এজেন্টদের হাতে নির্বিচার ও বেআইনি হত্যা সংঘটিত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কতজন মানুষ মারা গেছে বা এসব ঘটনা তদন্তে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বিগত সরকার তার কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার এ কাজ শুরু করেছে। প্রকাশ্যে আসা কিছু ঘটনার তদন্ত করে বিগত সরকার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছিল।

এতে বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সন্ত্রাস, মাদক ও অবৈধ অস্ত্রবিরোধী অভিযান বছরব্যাপী অব্যাহত ছিল। এ ধরনের অভিযানে সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থী আন্দোলন চলাকালে এটি চরম মাত্রায় পৌঁছায়। ২০ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে বিগত সরকারের সহিংসতায় মোট এক হাজার ৪২৩ জন মানুষ মারা গেছেন এবং ২২ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭৭ শতাংশই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের ৭০ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের নিচে এবং তাদের মধ্যে ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী। ভিকটিমদের মধ্যে ১০৭ জন শিশু, ছয়জন সাংবাদিক ও ৫১ জন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়