মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কীভাবে সামলাতে হবে, তা নিয়ে গোপনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পরামর্শ দেবেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি। খবর: এনডিটিভির।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সাংবাদিকদের একটি দলের সঙ্গে আলাপচারিতায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি ও ট্রাম্প আমার দুর্দান্ত বন্ধু। ট্রাম্পকে সামলানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কিছু পরামর্শ দেব, তবে গোপনে।’ এজন্য তিনি শিগগিরই ভারত সফর করবেন বলেও জানিয়েছেন।
ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি ‘খুব মজবুত’ বলেও অভিহিত করে দ্রত শুল্ক সমস্যা মিটিয়ে নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। তার কথায়, ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের ভিত্তি খুবই দৃঢ়। একটা সমাধানে পৌঁছানো এবং শুল্ক সমস্যা সমাধান দুই দেশের স্বার্থই রক্ষা করবে। যা ইসরাইলের জন্যও ভালো হবে, কারণ উভয় দেশই আমাদের বন্ধু।
ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা ও পাকিস্তানে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ বিষয়েও কথা বলেন নেতানিয়াহু। তিনি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আগে ভারতকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল ইসরাইল। সেসব অস্ত্রের সবকটিই ‘ভাল ভাবে’ কাজ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গাজা ভূখণ্ড নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের গাজা দখল করার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাদের লক্ষ্য কেবল হামাসকে খতম করা এবং তাদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা আমাদের নাগরিকেদের ফিরিয়ে আনা। আমরা গাজাকে কখনওই হামাস কিংবা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে ছাড়ব না।’
নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে নেতানিয়াহু বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। এটা আমি হৃদয় থেকে বলছি। প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ভারত তথাকথিত নিরপেক্ষতার অবস্থান থেকে সরে এসেছে। এখন ইসরাইল আর ভারত দারুণ বন্ধু।’
সীমান্ত পারের সন্ত্রাস আটকাতে ইসরাইল আকাশপথে নজরদারির নয়া সরঞ্জাম ভারতের হাতে তুলে দিতে চায় বলেও জানিয়েছেন সে নেতানিয়াহু।
রাশিয়া থেকে তেল কেনায় ভারতের ওপর শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) থেকে কার্যকর হয়েছে। বাকি ২৫ শতাংশ আগামী ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
ভারতের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, নতুন শুল্ক ঘোষণার পর ভারতের সঙ্গে তিনি আরও আলোচনা আশা করছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না, চলমান উত্তেজনার সমাধান না পর্যন্ত আলোচনা নয়।’
তবে ‘চলমান উত্তেজনা’ বলতে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান নাকি রাশিয়ার তেল ক্রয়ের কথা বলেছেন নাকি পূর্ববর্তী ২৫ শতাংশ শুল্কের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলোর নিষ্পত্তির কথা বলেছেন তা তার এই জবাবে স্পষ্ট নয়।