মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার (১০ জুলাই) ব্রাজিলের ওপর ৫০শতাংশ শুল্ক আরোপের চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠির জবাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা জানিয়েছেন, তার সরকার 'আনুপাতিক পাল্টা ব্যবস্থা' বাস্তবায়ন করবে।
দা সিলভা জোর দিয়ে বলেন, একতরফাভাবে শুল্ক বৃদ্ধির যে কোনো পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া ব্রাজিলের অর্থনৈতিক পারস্পরিক আইনের আলোকে দেওয়া হবে। ব্রাজিলের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতির দাবি 'ভুল'।
তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'মার্কিন সরকারের পরিসংখ্যানই গত ১৫ বছরে ব্রাজিলের সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবার বাণিজ্যে ৪১০ বিলিয়ন ডলারের উদ্বৃত্ত দেখায়।'
ট্রাম্প ইতোমধ্যে ২২টি দেশে শুল্ক পত্র পাঠিয়েছেন। ১ আগস্ট থেকে নির্দিষ্ট দেশগুলোতে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রাজিলে ৫০ শতাংশ শুল্ক হার দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে ট্রাম্প বলসোনারোর প্রতি ব্রাজিলের 'আচরণ' এবং মার্কিন প্ল্যাটফর্মগুলোকে লক্ষ্য করে সেন্সরশিপের বিষয়েও সমালোচনা করেন। এর জবাবে দা সিলভা বলেন, 'ব্রাজিল একটি সার্বভৌম দেশ, যার স্বাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং তারা কোনো ধরণের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করবে না।'
তিনি জোর দিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম 'একচেটিয়াভাবে' ব্রাজিলের বিচার বিভাগীয় শাখার এখতিয়ারের আওতাধীন। তাই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে- এমন কোনো 'হস্তক্ষেপ বা হুমকি' এর অধীন নয়।
এর আগে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে একটি চিঠিতে বলসোনারোর বিচারকে 'আন্তর্জাতিক লজ্জা' বলে নিন্দা করেছিলেন। তিনি বলেন, 'এই বিচার হওয়া উচিত নয়। এটি একটি জাদুকরী শিকার, যা অবিলম্বে শেষ হওয়া উচিত!' ট্রাম্প বলসোনারোর প্রতি 'আকুণ্ঠ সমর্থন' জানান।
মার্কিন প্ল্যাটফর্মগুলোকে লক্ষ্য করে সেন্সরশিপের অভিযোগ সম্পর্কে ডি সিলভা বলেন, 'ব্রাজিলিয়ান সমাজ ঘৃণ্য বিষয়বস্তু, বর্ণবাদ, শিশু পর্নোগ্রাফি, কেলেঙ্কারী, জালিয়াতি এবং মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বক্তৃতা প্রত্যাখ্যান করে।'
তিনি আরও বলেন, 'ব্রাজিলে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আগ্রাসন বা সহিংস অনুশীলনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। আমাদের ভূখণ্ডের মধ্যে কাজ করার জন্য সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে - দেশীয় হোক বা বিদেশি, ব্রাজিলের আইন মেনে চলতে হবে।'
প্রসঙ্গত, ব্রাজিলের শীর্ষ আদালত প্রাক্তন নেতা এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করার পর বলসোনারো এবং আরও সাতজনের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে পাঁচ-শূন্য ভোটে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, বলসোনারোর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অভিযোগের জন্য ফৌজদারি বিচারের প্রয়োজন। দোষী সাব্যস্ত হলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।