এল আর বাদল : ১২ দিন ব্যাপী চলা যুদ্ধের পর অবশেষে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল এবং ইরান। কিন্তু তারমধ্যেই ফের একবার ইহুদি দেশটিতে হামলা চালাল তেহরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন ইয়েমেনের হুতি। মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনার তরফে দাবি করা হয়, ইহুদি দেশটির ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইয়েমেনের দিক থেকে একটি মিসাইল ছোড়া হয়েছে। যদিও সেটি আকাশেই ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েলি সেনা। ফলে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইসরায়েলে এই হামলার পরই প্রশ্ন উঠছে, সংঘর্ষবিরতি চললেও গোপনে কি তাহলে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে ইরান? এর জেরে কি আবারও মধ্যপ্রাচ্যে বেজে উঠবে যুদ্ধনিনাদ? -- সংবাদপ্রতিদিন
ইসরায়েলে এই হামলার পরই জ্বলে উঠেছেন সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ। তিনি বলেন, “আবার হামলা চালালে হুতিদের চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে। ইয়েমেনের অবস্থাও ইরানের মতো করে ছাড়ব আমরা।
২০২৩ সালে গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করতেই তেল আভিভের সঙ্গে সংঘাত বাড়বে হুতিদের। কারণ, এই লড়াইয়ে তারা হামাসের পাশে। তারপর থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে একাধিক হামলা চালিয়েছে ইরানের মদতপুষ্ট এই জঙ্গি সংগঠনটি। পালটা জবাব দিয়েছে তেল আভিভও। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হুতিদের একাধিক ডেরা। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার ইসরায়েলে হামলা চালাল ইয়েমেনের জঙ্গি সংগঠনটি।
প্রসঙ্গত, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে হেজবোল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট নিক্ষেপের মুখেও পড়তে হয়েছে নেতানিয়াহুর দেশকে। আসলে হামাস, হাউথিদের মতো লেবাননের হেজবোল্লাও হল ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন। তাই ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধে তারাও নেমে পড়েছে। তবে বহু রক্ত ঝরার পর অবশেষে গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি হয় হেজবোল্লা ও ইসরায়েলের। কিন্তু ওই যুদ্ধবিরতি নামেই। দু’পক্ষের মধ্যে অনেকদিন ধরেই উত্তেজনার পারদ চড়েছে। যা ইরান-ইসরায়েল সংঘাত আবহে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। লেবাননের উত্তর সীমান্তে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নিকেশ করা হয় হেজবোল্লা কমান্ডার হুসেইনিকে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে ফের হেজবোল্লা আগ্রাসনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, লেবাননে হামলার জেরে এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছে জঙ্গি সংগঠনটি। তার উপর ইসরায়েলে হুতিদের সাম্প্রতিক হামলা বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে হেজবোল্লাকে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে হেজবোল্লা এবং হুতি দু’জনেই ইরানের মদতপুষ্ট। তাই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দুই জঙ্গি সংগঠনকে কাজে লাগিয়ে আসলে ইসরায়েলে ছায়াযুদ্ধ চালানোর পরিকল্পনায় রয়েছে ইরান। এসবের মাঝে ইসরায়েলের সঙ্গে তেহরানের যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে, সেটিও কি খুব শীঘ্রই ভেঙে যেতে চলেছে? এই প্রশ্নটিই এখন জোরাল হচ্ছে।