শিরোনাম
◈ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলীতে অবস্থানরত বাংলাদে‌শিদের জন্য দূতাবাসের জরু‌রি বার্তা ◈ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি ডলারে ১৬০ জেট কিনবে কাতার! ◈ আওয়ামী লীগ নির্বাচন থেকে বাদ পড়ায় কাদের সুবিধা হলাে ◈ মুস্তা‌ফিজ‌কে কি দেখা যাবে আইপিএলে? ক'টা ম্যাচ খেলবেন? ◈ স্প‌্যা‌নিশ লা লিগায় অনেক ক‌ষ্টে মায়োর্কাকে হারা‌লো রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ বাংলাদেশে নারী নির্যাতন : কক্সবাজার টু মুন্সিগঞ্জ ◈ হজযাত্রীদের লাগেজে অবৈধ মালামাল, ফের সতর্ক করল মন্ত্রণালয় ◈ বাংলা‌দেশ দল এখন আ‌মিরা‌তে, ‌টি - টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রি‌জের প্রথম ম‌্যাচ ১৭ মে ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়ন‌শি‌পের সেমিফাইনালে ১৬ মে নেপালের মুখোমুখি বাংলাদেশ ◈ জাতীয় দ‌লে বিদেশি কোচ কে‌নো? ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলার প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত : ০৮ মার্চ, ২০২৫, ০১:০৪ দুপুর
আপডেট : ১০ মে, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আ. লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের জেরে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করানোর পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে শিশু ও পুলিশসহ চারজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতরা হলেন নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার মহিলা দলের নেত্রী লাভলী খাতুন, তার আড়াই বছর বয়সী শিশুকন্যা লামিয়া, পুলিশের সিটিএসবির সদস্য তোফাজ্জল হোসেন ও রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি। পথচারী রনি ও সিটিএসবির সদস্য তোফাজ্জল ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন। আর মহিলা দলের নেত্রী লাভলীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এতে শিশুকন্যাসহ তিনি আহত হন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মেয়েকে নিয়ে বাসায় চলে যান মহানগর মহিলা দলের সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক লাভলী।

এদিকে সংঘর্ষের সময় দড়িখড়বোনা এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল দৈনিক আজকের পত্রিকার রাজশাহীর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জাহিদ হাসান সাব্বিরের। সংঘর্ষের সময় তিনি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। তার মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে রাখা ছিল। একটিপক্ষ তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহিলা দল নেত্রী লাভলীসহ তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকায় মুন রাবেয়া টাওয়ার নামে একটি ভবন ঘেরাও করেন। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ থাকেন নগরীর বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু ওরফে ব্যাটারি বাবু। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাটারি বাবু ও তার ভাই সাব্বির বাবুর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

ওই ভবনের সামনে লাভলী দাবি করেন, তারা ভবনের ভেতরে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ বাবুকে ঢুকতে দেখেছেন। তারা ভবনটি ঘিরে রাখলে যৌথ বাহিনী অভিযানে আসে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে ওই ভবনে মোস্তাককে পাওয়া যায়নি। যদিও ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় প্রবেশকারী হিসেবে মোস্তাকের নাম দেখা যায়। এছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও মোস্তাককে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ভবনে ঢুকতে দেখা যায়।

মোস্তাক আহমেদকে না পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবনটি ঘিরে রাখে। পরে সেখান থেকে মোস্তাক আহমেদের ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু মোস্তাকের নাগাল পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্র বলছে, মোস্তাক আহমেদ বাবুকে না পাওয়ার জন্য মহিলা দল নেত্রী লাভলী সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের লোকজন সন্ধ্যায় দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা করেন। তারা বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে চলে গেলে লাভলীর অনুসারীরা দড়িখড়বোনা রেল লাইনের পাশে মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এরপর দুইপক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায়। এ সময় হাতে হাতে ধারাল অস্ত্র দেখা গেছে। কয়েকটি হাতবোমারও বিস্ফোরণ হয়। সংঘর্ষের পর লম্বা সময়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি।

ঘটনার পর রাত সাড়ে ১১টায় নগরের মিয়াপাড়া এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলা দল নেত্রী লাভলী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অত্যাচারে আগে তারা বাড়িতে থাকতে পারেননি। এখন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ বাবুকে দেখে ভবন ঘেরাও করা এবং তার ভাই সাব্বিরকে পুলিশে তুলে দেওয়ায় বিএনপির লোকজনই তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাব্বিরকে তুলে দেওয়ার পর মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব মারুফ হোসেন জীবন তাকে প্রস্তাব দেন, তাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হবে, তিনি যেন এটা নিয়ে ঝামেলা না করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাসায় একই প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেটি ফিরিয়ে দেওয়ার পর তার বাসায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন লাভলী।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মারুফ হোসেন জীবনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তার ছোটভাই পরিচয় দিয়ে সনি নামের এক ব্যক্তি ফোন ধরেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘লাভলীর ভাই তাঁতী লীগ আর ছেলে যুবলীগ করত। তাদের ধরার জন্য ছাত্রদলের ছেলেরা গিয়েছিল। তারপর মারামারির ঘটনা ঘটেছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ বাবুকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেনি বলেও তিনি দাবি করেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়