আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মারা গেছেন বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী ব্রাজিলের মারিয়া ফেলিসিয়ানা ডস সান্তোস। গত শুক্রবার আরাকাজুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হবার পর থেকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
তার মৃত্যুতে শহরে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন আরাকাজুর মেয়র এডভালডো নোগুইরা। তিনি বলেন, মারিয়া ফেলিসিয়ানার মৃত্যু দুঃখজনক। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারীদের একজন। আমার মনে আছে যে, আমি মারিয়া ফেলিসিয়ানাকে প্রথম যখন দেখেছিলাম আমি তখন একটি শিশু ছিলাম।
আম্পারো দো সাও ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন মারিয়া । ১০ বছর বয়স পর্যন্ত একজন সাধারণ কিশোরীই ছিলেন তিনি। এরপর অবিশ্বাস্যভাবে লম্বা হয়ে ওঠেন। ২০ বছর বয়সের মধ্যেই তাঁর উচ্চতা দাঁড়ায় ৭ ফুট ৩.৮ ইঞ্চি। তিনি ষাটের দশকে ‘উচ্চতার রানি’ হিসেবে গোটা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
সার্জিপের গভর্নর ফ্যাবিও মিতিদিয়েরিও মারিয়ার দুঃখজনক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। গভর্নরের কথায়, মারিয়া ফেলিসিয়ানা ডস সান্তোসের মৃত্যুর খবর পেয়ে মর্মাহত হয়েছি। আমাদের রাজ্যের বৃহত্তম ভবনে তার নাম অমর হয়ে আছে। তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
সাধারণত মেয়েদের উচ্চতা পুরুষদের তুলনায় খুব কমই হয়। লম্বা মেয়েদের চাক্ষুষ করা খুবই বিরল ব্যাপার। কিন্তু মেয়েরাও লম্বা হয়। কেউ জিনগত কারণে, এবার কেউ জৈবিক উপায়ে। এই মারিয়া ছিলেন বিশ্বের প্রথম লম্বা নারী। আর তাঁর উচ্চতাই তাঁকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। তিনি ভাল বাস্কেটবল খেলতেন।
এরপর তরুণ বয়সে সার্কাসে নাম লেখান। অল্প কিছু দিনেই তিনি সার্কাসের একজন আকর্ষণীয় ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। দেশ-বিদেশ ঘুরে ফিরে সার্কাসের বিভিন্ন শো করতে শুরু করেন। এরপর তিনি এতটাই পরিচিত হয়ে ওঠেন যে, তাকে উচ্চতার রানি উপাধি দেয়া হয়।
এছাড়াও ১৯৭০ সালে তাঁর নামে নামাঙ্কিত হয় আরাকাজু শহরের সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিংটির। যার নাম ছিল এস্তা দো দে সার্জিপ। তবে ২৮ তলা বিল্ডিংটির নাম মারিয়ার হতেই ব্রাজিলের ইতিহাসে নাম উঠে যায়। ২০২২ সালে মে মাসে, ভবনটির প্রবেশদ্বারে মারিয়ার একটি মূর্তি বানানো হয়।
মৃত্যকালে মারিয়া তিন সন্তান রেখে গেছেন, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। তাদের সবারই উচ্চতা সাত ফুটের কাছাকাছি। মারিয়া মৃত্যুর আগে ১৫ বছর হুইলচেয়ারেই কাটান এবং গৃহবন্দি জীবনযাপন করতেন। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে বাড়িতেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে মারিয়া ফেলিসিয় নার।
মারিয়ার পর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নারী হলেন তুরস্কের রুমেসা গেলগি । তার উচ্চতা ৭ ফুট ০.৭১ ইঞ্চি। ২৬ বছর বয়সী রুমেসা ২০২২ সালে একাধিক রেকর্ডের অধিকারী হয়েছিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাত, দীর্ঘতম আঙুল ও দীর্ঘ পিঠের অধিকারী হিসেবে তকমা দেয়া হয়েছিল তাকে।
এবার গড়লেন বিশ্বের সবেচেয়ে লম্বা নারীর রেকর্ড। রুমেসার অস্বাভাবিক উচ্চতার কারণ মোটেই স্বাভাবিক নয়। মাত্র চার মাস বয়সে ওয়েভার সিনড্রোম ধরা পড়ে রুমেসার। এই রোগে আক্রান্তদের শরীরের হাড় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। ফলে বুদ্ধি হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শক্ত পেশী তৈরি হয়ে থাকে শরীরে।
আপনার মতামত লিখুন :