বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা হচ্ছে খুব। এই অবস্থায় মোহাম্মদ আশরাফুলকে ব্যাটিং কোচ নিয়োগ দেওয়ার একদিন পরই সহকারী কোচ সালাউদ্দিন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি অবশ্য দায়িত্ব ছাড়বেন আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর। আশরাফুলও দায়িত্ব পালন করবেন শুধু আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে। দুটি ঘটনা এই সময় ঘটায় অনেকেই আশরাফুল-সালাউদ্দিনের সম্পর্ক নিয়ে নানামুখী কথা বলছেন। এই ব্যাপারে মুখ খুলেছেন আশরাফুল। ক্রিকবাজকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই তার।
আশরাফুলের কথায়, ‘আমার সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো। সালাউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গেও আমার সম্পর্ক আগের মতোই ভালো। তিনি যখন কাজ করছিলেন, তখন আমি দলের অধিনায়ক ছিলাম। কোনও সমস্যা নেই।’
যেহেতু আশরাফুলের দায়িত্ব আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজ কেন্দ্রীক। তাই সেই সিরিজকে সামনে রেখে জানিয়েছেন, ব্যাটারদের প্রযুক্তিগত দিকের চেয়ে মানসিক দিকে কাজ করাই হবে তার মূল লক্ষ্য।
যার মধ্য দিয়ে আশরাফুল দীর্ঘ ১১ বছর পর জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে ফিরছেন ভিন্ন ভূমিকায়। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কারণে আট বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে খেলোয়াড় হিসেবে তার আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি। একান্ত আলাপে আশরাফুল জানান, খেলোয়াড়ি জীবন শেষে তিনি আগেই কোচিংয়ে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, গত দুই বছর ধরেই পরিকল্পনা করছিলাম— ক্রিকেট ছেড়ে আমি যেন মাঠের সঙ্গেই থাকতে পারি, কোচিংয়ে আসতে পারি।’
তিনি আরও জানান, ‘এরই মধ্যে গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে দুই মৌসুম কাজ করেছি, তারপর বিপিএলে এক বছর এবং এবার এনসিএলে কাজ করছি। দেশের প্রায় সব ক্রিকেটারের সঙ্গেই খেলেছি, কেউ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, কেউ ঘরোয়া লিগে। সবার সঙ্গেই কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে।’
দীর্ঘ দিন পর বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে ভিন্ন ভূমিকায় ফিরতে পেরে আশরাফুল বলেছেন, ‘আবার বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে ফিরতে পারছি—এটা ভীষণ ভালো লাগার। ১৩ বছর আমি এই ড্রেসিংরুমে খেলেছি, অনেক কোচের সঙ্গে কাজ করেছি, অনেক কিছু দেখেছি। এখন সেই অভিজ্ঞতাই শেয়ার করতে চাই বর্তমান খেলোয়াড়দের সঙ্গে।’
নিজের করণীয় সম্পর্কে আশরাফুল বলেছেন, ‘আমি মূলত খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভাগাভাগি করবো কেন আমি সফল হয়েছিলাম, কেন কখন ব্যর্থ হয়েছি, ধারাবাহিকতা কীভাবে ধরে রাখা যায়। এই খেলায় মানসিক দৃঢ়তা প্রযুক্তির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ- সেটাই বোঝাতে চাই। মানসিকভাবে পরিষ্কার থাকলে পারফরম্যান্স অনেক সহজ হয়ে যায়। এই জায়গাতেই আমি বেশি কাজ করবো।’
তবে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনে তিনি আগ্রহী নন বলেই জানিয়েছেন, ‘না, খুব বেশি টেকনিক্যাল পরিবর্তনে আমি বিশ্বাস করি না। চন্দরপল যেমন অদ্ভুত ভঙ্গিতে খেলেও হাজার হাজার রান করেছেন— কারণ তিনি মানসিকভাবে শক্ত ছিলেন। ক্রিকেটে মানসিক দৃঢ়তাই আসল, আর যতটা মুক্তভাবে খেলা যায়, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
টেস্ট দল নিয়ে আশরাফুলের মত, ‘টেস্ট দলটা অভিজ্ঞ। মুশফিক আছে, শান্ত অধিনায়ক, মিরাজ, লিটন, মুমিনুল— সবাই অভিজ্ঞ। আশা করি আমার জন্য সহজ হবে কাজ করা। টি-টোয়েন্টিতে যদিও শেষ সিরিজ বাদে আমরা টানা চারটি সিরিজ জিতেছি, তারপরও কিছু জায়গায় ব্যাটারদের পারফর্ম করার সুযোগ আছে। আমি মূলত তাদের সঙ্গে কাজ করবো শট নির্বাচন নিয়ে। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪০ কি.মি. বেগে বল আসে, তাই পাওয়ার হিটিংয়ের চেয়ে টাইমিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ উৎস: বাংলাট্রিকিউন।