শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর স্নিগ্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে এনসিপি-র (জাতীয় নাগরিক পার্টি ) ঘনিষ্ঠ একজন হিসেবে পরিচিত মীর স্নিগ্ধের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—এটা কি বিএনপির জন্য “ক্রেডিট”, নাকি এনসিপির জন্য “ডিসক্রেডিট”?
এ প্রসঙ্গে এনসিপি’র মুখপাত্র সামান্তা সারমিন বলেন, এটা কারোরই ক্রেডিট বা ডিসক্রেডিটের প্রশ্নই না।
তিনি মনে করেন, একজন নাগরিকের রাজনৈতিক স্বাধীনতা তার ব্যক্তিগত অধিকারেরই অংশ। সামান্তা বলেন, একজন মানুষের কোথায় রাজনীতি করবেন, কোন মতাদর্শে বিশ্বাস রাখবেন, এটা সম্পূর্ণ তার নিজের স্বাধীন সিদ্ধান্ত। আমরা কারো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করা শোভন মনে করি না।
সামান্তা আরও জানান, মীর স্নিগ্ধের সঙ্গে তার এবং দলের সম্পর্ক এখনও সৌহার্দ্যপূর্ণ। শুধু স্নিগ্ধ নয়, বিএনপির যারা নেতা ও কর্মী আছেন, তাদের সঙ্গেও আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌহার্দ্যের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতিই মিউচুয়াল রেসপেক্ট বজায় রাখতে চাই।
গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে এনসিপি’র ভূমিকা প্রসঙ্গে সামান্তা বলেন, আমরা কখনোই দাবি করিনি যে এনসিপি গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। গণঅভ্যুত্থান কোনো রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি নয়—এটা জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক চেতনা ও শক্তির ফলাফল। জনমানুষ তার নিজস্ব পলিটিক্যাল এজেন্সি দিয়েই এই আন্দোলন সফল করেছে।
তিনি আরও যোগ করেন, আমরা আওয়ামী লীগের মতো নির্লজ্জভাবে কোনো কৃতিত্ব দাবি করতে চাই না। এই গণঅভ্যুত্থান জনগণের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। রাজনৈতিক দল দিয়ে হলে এটা আগেই ঘটত।
মীর স্নিগ্ধ এর আগে “জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন”-এর সদস্য সচিব বা সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরে তিনি সেই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে নতুনভাবে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনাটি এনসিপি ও বিএনপির সম্পর্কের নতুন একটি অধ্যায় খুলে দিয়েছে। যদিও সামান্তা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, “এটা নিয়ে কোনো ধরনের তিক্ততা বা প্রতিযোগিতা নয়—আমরা চাই, সবাই নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করুক, তবে জনগণের স্বার্থই হোক চূড়ান্ত লক্ষ্য।”
সামান্তার এই মন্তব্যে বোঝা যায়, মীর স্নিগ্ধের বিএনপিতে যোগদানকে এনসিপি কোনো রাজনৈতিক ক্ষতি হিসেবে দেখছে না; বরং গণআন্দোলনের বৃহত্তর ঐক্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গাটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে।