স্পোর্টস ডেস্ক : ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) মাথায় ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহ। সৌরভ সভাপতি। জয় সচিব। কেমন ছিল সৌরভের সেই তিন বছরের অভিজ্ঞতা? জয়কে নিয়ে কি সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে? বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার তিন বছর পরে মুখ খুললেন সৌরভ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই তিন বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন সৌরভ। তিনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে জয়ের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু তাঁর কিছু কথায় এ-ও মনে হয়েছে, জয়কে খোঁচা মেরেছেন তিনি। তাঁদের কাজের ধরন যে এক ছিল না তা জানিয়ে দিয়েছেন ‘দাদা’। তিনি বলেন, ওর কাজ করার নিজস্ব ধরন ছিল। কিন্তু ওর কাজের ক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে ভাল ছিল, তা হল, উনি ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য কাজ করতেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয়। বিসিসিআইয়ের সচিব হওয়ার আগে গুজরাত ক্রিকেট সংস্থায় ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষমতাশালী তিনি। সেই কারণেই কি একটু হলেও একরোখা জয়? সৌরভের কথায় তারই ইঙ্গিত। তিনি বলেন, ওর ক্ষমতা রয়েছে। সমর্থন রয়েছে। তাই উনি যে কিছুটা কঠোর, একরোখা হবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু উনি যা করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য।
তাঁদের দু’জনের প্রেক্ষাপট আলাদা। সৌরভ ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। অধিনায়ক হয়েছেন। তার পরে প্রশাসনে এসেছেন। অন্য দিকে জয় কোনও দিন ক্রিকেট খেলেননি। রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছেন। তবু দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল বলেই জানিয়েছেন সৌরভ। তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্ক ভাল ছিল। এখনও আছে। যখন উনি বিসিসিআইয়ের সচিব হয়েছিলেন তখন ওঁর বয়স কম। কিন্তু প্রথম থেকেই খুব সাহায্য করতেন। যখনই চাইতাম ওঁর সঙ্গে কথা বলা যেত।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কার্যকাল শেষ হয় সৌরভের। জয় অবশ্য আরও তিন বছর বিসিসিআইয়ের সচিব ছিলেন। তার পরে আইসিসি-র চেয়ারম্যান হয়েছেন। একসঙ্গে কাজ করলেও দু’জনের মতের মিল যে সব সময় হত না তা বোঝা গিয়েছে সৌরভের কথায়। তিনি বলেন, “ওঁর আলাদা মত থাকত। সেটাই তো স্বাভাবিক। নিজের মত অনুযায়ী কাজ করতেন। এখনও করছেন। এখন তো আইসিসির চেয়ারম্যান। আরও বড় পদে রয়েছেন।” সময়ের সঙ্গে জয় আরও পরিণত হয়েছেন বলে মনে করেন সৌরভ। তিনি বলেন, “উনি বরাবর ক্রিকেটারদের পাশে থাকেন। যত শিখেছেন তত পরিণত হয়েছেন। ওঁর সবচেয়ে ভাল দিক হল সব সময় ক্রিকেটের উন্নতি চেয়েছেন।
যখনই জয়ের কথা হয়েছে, তখনই তাঁর পিতা শাহের প্রসঙ্গ এসেছে। রাজনৈতিক ভাবে তাঁকে নিশানা করা হয়েছে। সেই বোঝা নিয়েই তাঁকে এগোতে হয়েছে। সৌরভের মতে সেটা সহজ কাজ নয়। তিনি বলেন, “জয় খুব সৎ। ওঁকে সব সময় ভাবতে হয়েছে ওঁর পিছনে কে আছেন। কোন বোঝা ওঁকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তাই সময়ের কাজ সময়ে করার চেষ্টা করেছেন।
তবে তার মধ্যেই যে তাঁরা কিছু ভুলও করেছেন, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সৌরভ। তাতে অবশ্য ক্রিকেটের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি। সৌরভ বলেন, “আমরা সকলেই ভুল করি। আমি করেছি। উনিও করেছেন। কিন্তু জেনেশুনে কোনও দিন তা করিনি। তার জন্য ক্রিকেটের কোনও ক্ষতি হয়নি।