শিরোনাম
◈ ডলারের দাম বৃদ্ধি, আরও দুর্বল হলো টাকা ◈ ১০ হাজারেরও বেশি হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ◈ এখন পর্যন্ত কত টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সরকার, জানালেন প্রেস সচিব ◈ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের শঙ্কা ঢাকাসহ ১৪ জেলায়, সতর্ক সংকেত ◈ ডিএসসিসি মেয়রের দায়িত্ব নিয়ে উত্তাল নগর ভবন, মুখ খুললেন ইশরাক হোসেন ◈ বিশ্বব্যাপী ভারতের সর্বদলীয় কূটনৈতিক যুদ্ধ ◈ লুটপাটের অর্থ জনকল্যাণে ব্যবহারে বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ◈ বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছে: উপদেষ্টা আসিফ ◈ বিমানের চাকা খুলে পড়ার কারণ ‘বিয়ারিং ফেইলিওর’: তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন ◈ নুসরাত ফারিয়া মামলার ঘটনার দিন দেশে ছিলেন না, কানাডায় ছিলেন: আইনজীবী

প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২৫, ০৩:০৫ দুপুর
আপডেট : ১৯ মে, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

আমরা সংস্কার চাই,তবে সেটি অবশ্যই প্রয়োজন এবং সক্ষমতা অনুযায়ী হতে হবে : নজরুল ইসলাম খান

মনিরুল ইসলাম:  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র এখনো পুনরুদ্ধার হয়নি।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় অন্য বক্তারা বলেন, প্রয়োজন হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আবারও মাঠে নামবো। নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করণ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আওয়ামী পুনর্বাসন করছি বলে আলোচনা হচ্ছে! যেই দলটা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, দলের চেয়ারপারসনকে বিনা কারণে কারাগারে রেখেছে। তারেক রহমানকে নির্বাসনে রেখেছে। ছোট ভাই মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। বিএনপির মহাসচিব সহ এমন কোনো নেতাকর্মী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি? আর আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করছি! এটা কী সম্ভব? এসব ফাইজলামির শেষ হওয়া উচিৎ। আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপোস হবে? কেউ করতে গেলেও আমরা বাঁধা দেবো।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলনে জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৭শ‘র বেশি মানুষ মারা গেছেন। জুলাই আন্দোলনে সহস্রাধিক মানুষ খুন হয়েছে। লাখ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হাজারো মানুষ আহত ও অঙ্গহানির শিকার হয়েছে। অনেকেই হয়রানি ও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও আন্দোলন করেছি। যার মূল লক্ষ্য ছিলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের পতল হয়েছেও। দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ এই লড়াইয়ে শরিক হয়েছিলো। তবে জনগণের নির্বাচিত সরকার তথা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়নি।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, শহিদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সেজন্য কিছু মেরামত প্রয়োজন। ফলে সংস্কারের দাবি ওঠে। অবশ্য যখন কেউ সংস্কার নিয়ে কথা বলেনি তখন ২০১৭ সালে খালেদা ‘ভিশন-২০৩০‘ ঘোষণা দেন। এরপর ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই তারেক রহমান ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করেন। যেটি সকল দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তীতে ৩১ দফা করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কার প্রস্তাব করছে সেগুলো আমাদের ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা কখনো জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে সেই রুপরেখা বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ। দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না সেটি আমরাই প্রথম বলেছি। ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার কথা বলেছি। কারণ আমরা চাই রাষ্ট্রটি ভালো চলুক। যাতে কেউ একক ক্ষমতার অধিকারী এবং জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। 

তিনি বলেন, আমরা সংস্কার চাই। তবে সেটি অবশ্যই প্রয়োজন এবং সক্ষমতা অনুযায়ী হতে হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য পরবর্তী সংসদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ঐকমত্য কমিশনে আমরা যারা ঐকমত্য পোষণ করেছি সেটার একটা তালিকা করে সনদ করা হোক। তাহলেই তো সমস্যা থাকার কথা না। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে বাধা কেনো? নির্বাচন দেরি কেনো হবে তার ব্যাখ্যা তো আপনাদেরকে দিতে হবে। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার চাই।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও ১২ দলী জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার অবিলম্বে নির্বাচনী রোড ম্যাপ ঘোষনার দাবি জানান। তিনি বলেন, তারেক রহমানের পাহাড়সম জনপ্রিয় নেতা দেশে আসতে পারছেন না একথা আমরা বিশ্বাস করিনা । তার দেশে ফিরতে যে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকলে সরকারকে তিনি তা স্পষ্ট করতে বলেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফেরার নিশ্চয়তা দিন। কিন্তু আপানারা কোনো কথা বলেননি। নির্বাচন নিয়ে আবারো দাবি জানাতে হবে সেটি ভাবিনি। আজকে ড. ইউনূসের চারপাশে মাফিয়া চক্র ঘিরে রেখেছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত চলছে। যা দেশের জন্য বিপজ্জনক। প্রেস সচিবের পদত্যাগ দাবি করছি। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না। তাহলে অনেক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা তো কাজ করছেনা। সেসব কি বিদেশিদের হাতে তুলে দিবেন? এসব বাদ দিয়ে অবিলম্বে অক্টোবর থেকে নভেম্বর সর্বোচ্চ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। অন্যথায় ডিসেম্বরের পর আপনাদেরকে আমরা এক মুহূর্তের জন্যও সহ্য করবোনা। শেখ হাসিনাকে যখন নামিয়েছি তেমনই আপনাদেরও পরোয়া করবোনা।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আমরা চব্বিশের ৫ আগস্টের পর একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম ড. ইউনূস সম্মানিত ব্যক্তি দেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেবেন। কিন্তু এখন তার মুখেই স্বৈরাচারের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। তারা বড় বড় কথা বলে এখন আবোল তাবোল বকছেন। তলে তলে মানবিক করিডোর দিয়ে বাংলাদেশকে আরেকটি পূর্ব তিমুর বানানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তারা বাংলাদেশের আয়ের অনঅন্যতম প্রধান উৎস চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। সেটি হতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। না হলে পালানো তো দূরের কথা পিঠের চামড়া থাকবেনা। অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার পথ সুগম করতে হবে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। জাতি জানতে চায় তারেক রহমানের দেশে ফিরতে প্রতিবন্ধকতা কোথায়?

মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সমস্যা কোথায়? নির্বাচন দিবেন না? দিতে বাধ্য হবেন এবং দেশ ছেড়ে পালাবেন। নারী সংস্কার কমিশন করবেন, মানবিক করিডোর দিবেন, বন্দর দিয়ে দিবেন এসব করা যাবেনা। অবিলম্বে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করুন সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিন।

অন্য বক্তারা বলেন, আমরা শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতন্ত্রের জন্য অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরার পথ সুগম করতে পারছেনা। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়াচ্ছেনা। আমরা বলবো- আগুন নিয়ে টালবাহানা করবেন না। অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেনশে ফেরার পথ সুগম করুন। দেশে দ্রুত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করুন। অবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়