সামাজিক কুসংস্কারের চাপে এক ঋণগ্রস্থ ব্যক্তির আত্মহত্যার পর তার পরিবারকে ঋণ করে চল্লিশা পালন করতে হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া হৃদয়বিদারক ঘটনাটির প্রসঙ্গ টেনে চল্লিশা প্রথার ইসলামি দৃষ্টিকোণ তুলে ধরেছেন খ্যাতনামা ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, একজন মানুষ ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অথচ মৃত্যুর পর তার পরিবারকে ঋণ করেই তার চল্লিশা পালন করতে বাধ্য করা হয়েছে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ লেখেন, ‘দ্বীনি শিক্ষার অভাব এবং দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা যে কতটা নির্মম হতে পারে, এই ঘটনা থেকে তা আমরা নতুন করে উপলব্ধি করলাম। ইসলাম অত্যন্ত যৌক্তিক ও প্রাকৃতিক ধর্ম। ইসলাম যতগুলো আর্থিক ইবাদত আবশ্যক করেছে, সবই সামর্থ্যবানদের জন্য। কিন্তু ইসলামের ভেতর চল্লিশা নামের যে কুসংস্কার আমরা ঢুকিয়েছি, অনেক এলাকায় সেটা সবার ওপর আবশ্যক। এমনকি ঋণ কিংবা জমি বিক্রি করে হলেও তা পালন করতে হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘লোকটি ঋণে জর্জরিত হয়ে মারা গেছেন। আর আজকাল সুদবিহীন ঋণ সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। অভিশপ্ত সুদ কীভাবে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে দরিদ্রকে আরো নিঃস্ব বানাচ্ছে আর সুদি মহাজনদের বানাচ্ছে আরো বিত্তশালী, আলোচ্য ঘটনা তার একটি উদাহরণ।’
শায়খ আহমাদুল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে লেখেন, ‘আত্মীয়-স্বজনের উচিত ছিল নিজেরা টাকা তুলে লোকটার ঋণ পরিশোধ করা। সেটা তো করেইনি, উল্টো মৃতের পরিবারকে চাপে ফেলে ঋণ করে হলেও চল্লিশা করতে বাধ্য করেছে। ঋণে জর্জরিত ওই মানুষটির চল্লিশা যারা খেলেন, খাবার কীভাবে তাদের পেটে নামল, ভেবে বিস্মিত হচ্ছি।’
প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনও চল্লিশা পালনকে সামাজিকভাবে বাধ্যতামূলক মনে করা হয়। ইসলামি পণ্ডিতরা বরাবরই এ প্রথাকে কুসংস্কার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, এ ধরনের প্রথা ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী এবং সমাজে দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতার করুণ পরিণতি তুলে ধরে।