আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জোরপূর্বক অপহরণ ও গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কারাবন্দি ১৫ জন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ওকালতনামা জমা দিলেও আইনি লড়াই করবেন না বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. সরোয়ার হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তর-কে তিনি জানান, সেনাবাহিনীর ওই ১৫ আসামির মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ করেছিলেন। সেই কারণেই তাদের কারও পক্ষে শুনানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এদিকে, আজ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের উদ্দেশে এক বার্তায় বলেন, “১৫ সামরিক কর্মকর্তার আইনজীবী নিজেই বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ওই ১৫ জনের একজনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।”
গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় গতকাল বুধবার ১৩ জন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দুইজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই আদেশ দেন আদালত।
যে ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন— একজন মেজর জেনারেল, ছয়জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, চারজন কর্নেল, তিনজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও একজন মেজর পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা।
বুধবার ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন ১৫ আসামির পক্ষে শুনানির অনুমতি চেয়ে ওকালতনামা দাখিলের আবেদন জানান। ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করার পর তিনি ওকালতনামা জমা দেন।
ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে তিনি গুমের অভিযোগ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “গতকাল (বুধবার) যখন সেনা কর্মকর্তাদের হাজির করা হলো, তখন আমার কাছে কোনো নথি (ডকুমেন্ট) আসেনি। পরে নথি হাতে পেয়ে দেখি, যার বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করেছিলাম, তিনিও আসামিদের মধ্যে রয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “বার কাউন্সিলের বিধান অনুযায়ী একসঙ্গে দুই পক্ষের আইনজীবী হওয়ার সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে শুনানি করলে পেশাগত অসদাচরণের বিষয় উঠে আসবে। তাছাড়া মানুষ ভুল বুঝবে, রাষ্ট্রপক্ষও বিষয়টি সামনে আনবে। তাই আমি তাদের (সেনা কর্মকর্তাদের) কারও পক্ষেই শুনানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” সূত্র: দেশরুপান্তর