এল আর বাদল : দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের ক্ষমতার অপব্যবহারে ‘এবার আমাদের পালা’ স্বরূপ আচরণ উদ্বেগজনকভাবে ক্রমাগত বাড়ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়েছে, কর্তৃত্ববাদ পতনের পর থেকে দেশব্যাপী বহুমাত্রিক দলবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট, মামলা বাণিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, জামিন বাণিজ্য, ট্যাগ বাণিজ্য ও দলীয় আধিপত্যকেন্দ্রিক সহিংসতা চলছে। যা নতুন বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অভীষ্টের জন্য অশনি সংকেত। বিবিসি বাংলা
মুখে সংস্কার অথচ কার্যত আধিপত্য, দখল ও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি অব্যাহত থাকায় গণতান্ত্রিক ‘নতুন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার গণ আকাঙ্ক্ষাকে রীতিমতো পদদলিত করা হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “কর্তৃত্ববাদ পতনের পরিপ্রেক্ষিতে গত এক বছরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যারা সবচেয়ে প্রভাবশালী বলে বিবেচিত, তাদের নেতা-কর্মীদের একাংশের কার্যক্রম পতিত কর্তৃত্ববাদী আমলের সরকারি দলের বহুমুখী ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বার্থসিদ্ধিমূলক অসুস্থ চর্চার প্রতিচ্ছবি হিসেবেই বিকশিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাপ্রত্যাশী ও প্রভাবশালী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের একাংশের সরাসরি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগসাজশমূলক সম্পৃক্ততায় দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবারও স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। পরিতাপের বিষয়, অনেক ক্ষেত্রে এই যোগসাজশে নির্বিকারভাবেই যুক্ত থাকছে পতিত রাজনৈতিক শক্তিও।
সর্বোপরি কর্তৃত্ববাদ পতন পরবর্তীকালে বহুল প্রত্যাশিত “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত” পুরোনো অসুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির হাতে ক্রমাগত দৃশ্যত জিম্মিদশায় পতিত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন মি. ইফতেখারুজ্জামান।
রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলো দেশবাসীকে কি এই বার্তাই দিচ্ছে যে যদিও তারা সংঘবদ্ধ হয়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন সম্ভব করেছে, কর্তৃত্ববাদী চর্চার অবসানে তাদের আগ্রহ নেই, বরং এই চর্চা লালন করাই তাদের অভীষ্ট?” বলেন তিনি।
“নতুন বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে এখনই রাজনৈতিক দলের গঠনমূলক আত্মজিজ্ঞাসাভিত্তিক মৌলিক পরিবর্তনের পথ অনুসন্ধান এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে দুর্বৃত্তায়নের সংস্কৃতি থেকে সরে আসার পথ বের করার আহ্বান জানিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
“অন্যথায়, “নতুন বাংলাদেশের” রাজনীতির সাথে পতিত কর্তৃত্ববাদের পার্থক্য খুঁজে পাওয়া অসম্ভব হবে” বলেছেন মি. ইফতেখারুজ্জামান।