অর্থনৈতিক খাতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ফেরেনি উল্লেখ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) জানিয়েছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের দাবি থাকলেও এতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাজস্ব ঘাটতি এবং ঋণ খেলাপি পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। এমনকি কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও আয়করের তিন খাতেই লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের মূল উপস্থাপনায় টিআইবি জানায়, ঘাটতি গোপন করে দেশত্যাগে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। ঢালাওভাবে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ও মামলা বাণিজ্যের অভিযোগও উঠে এসেছে। এমনকি গ্রেপ্তাররা আদালতের ভেতরে হামলার শিকার হয়েছেন। আন্দোলনের পর বিভিন্ন থানায় হামলা, প্রতিশোধমূলক আটক ও জামিন না মঞ্জুরের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
আজ সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকার পতনের পর ১১ মাসে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী ও হত্যার নির্দেশদাতা–ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ২০২৫ সালের ১ জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০২টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩৮টি হত্যা মামলা। এসব মামলার প্রায় ৭০ শতাংশের তদন্তে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে এবং ৬০ থেকে ৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
তবে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার প্রসঙ্গে টিআইবি জানায়, গত ১১ মাসে সারাদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭৬১টি মামলায় মোট ১ হাজার ১৬৮ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে মাত্র ৬১ জন। ট্রাইব্যুনালে পুলিশের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রমেও ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত মোট ৪২৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে এবং ২৭টি মামলা হয়েছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৩ জনকে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি বলেছে, অবস্থা এমন যে, অনেক ক্ষেত্রেই জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষমতাহীন রয়ে গেছে। যা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।