জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ১৬ বছর ধরে যে সকল রাজনৈতিক শক্তি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন তাদের সকলেরই চাওয়া এমন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে নাগরিক অধিকার সুরক্ষার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকবে, একটি জবাদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থাকবে। একজন ব্যক্তি যিনি প্রধানমন্ত্রী হন বা যা-ই হন, তিনি যেন ক্ষমতার উর্ধ্বে বা ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত হয়ে না যান। ঢাকায় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম সেভাবে পরিবর্তনের ধারা সূচনা করতে হবে। কাঠামোগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যেখানে ভবিষ্যত প্রজন্ম বাংলাদেশকে একটি আদর্শ জায়গা বলে বিবেচনা করতে পারে। এ দেশের জনগণকে বা তরুণ প্রজন্মকে যেন আর কখনও তার অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিতে না হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সকলের ঐকমত্যে ভবিষ্যত বাংলাদেশের একটি পথরেখা তৈরির আশাবাদ ব্যক্ত করে সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমরা সকলেই চেষ্টা করছি একমত হয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে যা ভবিষ্যত বাংলাদেশের পথরেখা নির্দেশ করবে। রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে কমিশন অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে৷ মূলত, রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং জনগণকে ঐক্যের জায়গায় পৌঁছাতে হবে, তবেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।
আলোচনায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুলের নেতৃত্বে দলটির মহাসচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিম এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুল কাদের, পারভীন নাসের খান ভাসানী এবং আমিনুল ইসলাম সেলিমসহ ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। ভাসানী অনুসারী পরিষদসহ এ পর্যন্ত ২৭টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।