শিরোনাম
◈ ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের চাপ সামলাবে কে: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্যনীতিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা ◈ ডলারের বিশ্বায়ন: যেভাবে একটি মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতিকে শাসন করছে ◈ ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসছেন আরও ৩০ বাংলাদেশি ◈ যশোরের মনিরামপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে যুবদলের চার কর্মী গ্রেফতার ◈ মিয়ানমারের রাজনীতিতে নতুন মোড়, জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর! ◈ ইসরায়েলি নাগরিক সাফাদির সাথে সাক্ষাৎ: স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন নুর (ভিডিও) ◈ জিম্বাবুয়েকে হা‌রি‌য়ে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনা‌লে বাংলা‌দেশ ◈ মির্জা আব্বাসের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ (এনসিপি) সরকার? ◈ ফার্মেসির পরামর্শে শিশুর ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, গবেষণায় বিপদের ইঙ্গিত ◈ মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০২ মে, ২০২৫, ১১:৫৯ রাত
আপডেট : ০৫ জুলাই, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মালয়েশিয়া ১২ লাখ নয়, সর্বোচ্চ ২ লাখ কর্মী  নিতে পারে 

সম্প্রতি কিছু মহল থেকে মালয়েশিয়ায় ১২ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার সম্ভাবনার কথা বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা আদতে অতিরঞ্জিত এবং বাস্তবতা থেকে অনেক দূরের একটি কল্পনা বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজার বিশ্লেষক সূত্র।

আফিয়া ওভারসিস (আর এল-১০১০) এর স্বত্বাধিকারী আলতাব খান বলেন, "এ ধরনের মিথ্যা নিউজ প্রকাশ করার কারণে বাংলাদেশে অনেক গরীব শ্রমিক প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক শ্রেণি দালাল এই নিউজটা দেখিয়ে বিদেশগামী সাধারণ শ্রমিকের নিকট হতে পাসপোর্ট কালেকশন করবেন এবং অবৈধভাবে মেডিকেল করাবেন, অগ্রিম টাকা পয়সা কালেকশন করবেন। আগামী ১৫ই মে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে একটি আলোচনা সভা হবে। সেই আলোচনা সভায় হয়তো সিদ্ধান্ত হতে পারে কোন প্রক্রিয়া এবং কত শ্রমিক মালয়েশিয়াতে প্রয়োজন। তাছাড়া মালয়েশিয়া সরকারের জাতীয় পলিসি বলছে, মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে ১৫% লোক বিদেশের শ্রমিক আনতে পারবেন, বর্তমানে মালয়েশিয়া ১৫টি সোর্স কান্ট্রির ২৫ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছেন। সে অনুযায়ী বর্তমানে মালয়েশিয়া সর্বোচ্চ তিন লক্ষ শ্রমিক আমদানি করতে পারবেন সেটা সকল দেশ থেকে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ হয়তো সর্বোচ্চ ২ লাখ লোক রপ্তানি করতে পারবেন।"

জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি করতে সিন্ডিকেটের করার জন্য একশ্রেণির রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অনেকেই সিন্ডিকেটের পক্ষে হাজার যুক্তিতর্ক খাড়া করাচ্ছে। তার মধ্যে, বৈধভাবে কর্মী রপ্তানি করতে না পারলে ২০১৩ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে। অর্থাৎ সাগর পথে নৌকা, সাম্পান দিয় মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি কর্মীরা অবৈধভাবে প্রবেশ করবে। কিন্তু মালয়েশিয়ার অধিকাংশ ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০১৩ সালের পরিস্থিতি আর ২০২৫ সালের পরিস্থিতি এক নয়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, এগুলো আসলে ইচ্ছাকৃত জল্পনা-কল্পনা, যার উদ্দেশ্য হলো সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাপ দেওয়া যা সিন্ডিকেটের স্বার্থে যায়। হতে পারে মালয়েশিয়ার অতিরিক্ত ১২ লক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন আছে, আর আমাদের শ্রমিকরা যেহেতু বিদেশে আসতে ভালো টাকাপয়সা খরচ করতে পারে, তাই এটা হয়তো একটি যৌক্তিক অনুমান যে, সিন্ডিকেট কেবল বাংলাদেশি শ্রমিকদেরই অন্তর্ভুক্ত করবে—নিজেদের লাভের জন্যই!

এ বিষয়ে এশিয়ার হিউমান রাইটস ডিফেন্ডার এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার রাইটস এক্টিভিস্ট অ্যান্ডি হল দৈনিক মানবজমিনকে জানিয়েছেন যে, "১২ লাখ কর্মি নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বরং এটি মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা।"

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ইস্যুতে তিনি আরো জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) টি পুরোপুরি নতুনভাবে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। এসব চুক্তির এমন কিছু ধারা রয়েছে, যা সিন্ডিকেটদের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, অংশগ্রহণ সীমিতকরণ, খরচ বৃদ্ধি এবং আইনের শাসনকে দুর্বল করার সুযোগ দিয়েছে।

মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ত্রুটিপূর্ণ এমওইউ সতর্কতার সাথে সংশোধন করতে হবে যাতে সব ধরনের সিন্ডিকেটের প্রভাব থেকে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা মুক্ত করা যায়। দায়িত্বহীন, অনিয়মিত ও অনৈতিক নিয়োগ পদ্ধতি বহু শ্রমিকের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে তা বাতিল করতে হবে এবং মালয়েশিয়ার সরকারের সাথে ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফডব্লিউসিএমএস)-এর চুক্তি অব্যাহত থাকায় এ নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কারা অংশ নিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে, ফলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ব্যাহত হচ্ছে।

এছাড়া এফডব্লিউসিএমএস-এর হালনাগাদ ওয়েবসাইটে এখনো বাংলাদেশের অনুমোদিত এজেন্সিগুলোর তালিকা প্রকাশিত হয়নি, যদিও অন্যান্য সোর্স কান্ট্রিগুলোর তালিকা সেখানে রয়েছে। এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে যে, সিন্ডিকেটের শর্ত মেনে নেওয়ার আলোচনা চলার কারণেই তালিকা প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে।

তিনি দৈনিক মানবজমিনকে আরো জানিয়েছেন, শ্রমবাজার খোলার আগেই বাংলাদেশ সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ে এমওইউ পুনরায় পর্যালোচনা করে এমন সব ধারা বাদ দেওয়া, যা সিন্ডিকেট গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করে। উৎস: মানবজমিন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়