শিরোনাম
◈ টেকনাফে বাংলাদেশি ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি ◈ রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ, ১৪টি শহর বিদ্রোহীদের দখলে, নজর রাখছে চীন ও ভারত ◈ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে: সালাহ উদ্দিন আহমদ ◈ খালেদা জিয়ার সঙ্গে রোববার সন্ধ্যায় বৈঠক করবেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ◈ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা কার্নির ◈ আমাদের উপদেষ্টা যারা দায়িত্ব পালন করছেন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই তারা অসহায়: মির্জা ফখরুল ◈ পরাজ‌য়ে শুরু, পরাজয় দি‌য়ে শেষ বাংলা‌দেশ দ‌লের টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ◈ আমাকেও বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে: অমর্ত্য সেন ◈ ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ‘ঐতিহাসিক’ বলছে ইসলামাবাদ ◈ ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময় জানাল এনসিটিবি

প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ০২:০৬ দুপুর
আপডেট : ২৪ আগস্ট, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নতুন করে মহাবিপদে পড়তে যাচ্ছে ইরান

ইরানের দীর্ঘতম এবং একমাত্র নৌযান চলাচলের উপযোগী নদী কারুন নদী। যত দিন যাচ্ছে এ নদী তার স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে। খরা, প্রবাহ হ্রাস, রাসায়নিক দূষণ এবং জলাভূমির ক্ষয়ের কারণে অদূর ভবিষ্যতে নদীর বড় একটি অংশ বিলীনের শঙ্কায় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কারুন-৩, কারুন-৪ ও গোতভান্দের মতো বাঁধের মাধ্যমে জলবিদ্যুতের মূল উৎস এই নদীটির পানির স্তর তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বাঁধ নির্মাণ নীতিকে অস্থিতিশীল বলে সমালোচনা হয়ে আসছে। বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার চেয়ে দুর্বল শাসনব্যবস্থা এবং স্বল্পমেয়াদী রাজনৈতিক স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত প্রকল্পের কারণে নদীর এই দশা হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

এ নিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে জলাভূমি বাস্তুতন্ত্র ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ আলী আরভাহির বক্তব্য তুলে ধরা হয়। বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নদীটি সংকটে পড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো কারুন ও গোতভান্দের মতো বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, ইসফাহান ও ইয়াজদের মতো প্রদেশে ইন্টার-বেসিন পানি স্থানান্তর এবং খুজেস্তানে আখ ও ধানের মতো পানি-নির্ভর ফসলের চাষ।

কারুন ৩ এবং গোতভান্দ বাঁধ খুজেস্তান প্রদেশে অবস্থিত। সেখানে কারুন ৪ চাহারমহল এবং বখতিয়ারিতে অবস্থিত।

আরভাহি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে করুণ নদীর প্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে ১০০ ঘনমিটারের নিচে নেমে এসেছে। যা একসময় প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ থেকে ৬০০ ঘনমিটার ছিল।

পানি সংকট ও বায়ু দূষণ

খুজেস্তান আখ চাষের একটি প্রধান কেন্দ্র। চলমান পানি সংকট সত্ত্বেও, ৮০,০০০ হেক্টরেরও বেশি আখ চাষের আওতায় রয়েছে। আরভাহি বলেন, খুজেস্তানের আধা-শুষ্ক জলবায়ুতে আখ চাষ দীর্ঘমেয়াদে টেকসই বা অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর নয়। কারুন অববাহিকার বৃহত্তম পরিকল্পনামূলক ভুলগুলোর মধ্যে এটি একটি। যা সীমিত পানি সম্পদের উপর চরম চাপ সৃষ্টি করছে।

ইরানের মধ্যে এই প্রদেশটি সর্বোচ্চ বায়ু দূষণের মাত্রারও শিকার।

বৃহস্পতিবার ইরানের এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টেম খুজেস্তানের একাধিক শহরে অস্বাস্থ্যকর (লাল-স্তরের) অবস্থার রেকর্ড করেছে। আহভাজের স্কোর ছিল ১৬৮, হেন্দিজানের ১৬৭, বেহবাহানের ১৬৩, রামহরমোজের ১৫৬, আন্দিমেশক ও ওমিদিয়াহের স্কোর ছিল ১৫৫।

বায়ু মান সূচকে নিরাপদ (সবুজ) স্কোর হলো ০-৫০। ১০০ এর উপরে স্কোর পাওয়া যেকোনো শহর অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত। সেসব শহরে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর বসবাস নিরাপদ নয়।

বিরূপ জলবায়ু

চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ইরান বর্তমানে তীব্র সুপেয় পানি সংকট এবং ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ একাধিক জাতীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এসব দেশের কৃষি শিল্পকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

রিবেশবিদ এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মনসুর সোহরাবি ইরান ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, আমরা এখন যে পরিস্থিতি দেখছি তা হলো- দেশের বেশিরভাগ অংশে সম্পূর্ণ খরা দেখা দিতে পারে। অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটি ত্বরান্বিত হচ্ছে। যখন তারা (কর্তৃপক্ষ) এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করতে পারত, তখন তারা কোনো মনোযোগ দেয়নি।

গত এক বছরে ইরানে গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাত ৪৫% হ্রাস রেকর্ড করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি দেশব্যাপী মরুকরণকে ত্বরান্বিত করেছে।

কারুন নদী ইরানের দীর্ঘতম নদী। জাগ্রোস পর্বতমালা থেকে খুজেস্তান প্রদেশ হয়ে পারস্য উপসাগর পর্যন্ত ৯৫০ কিলোমিটার (৫৯০ মাইল) বিস্তৃত এ নদী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই এ নদীকেও বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়