শিরোনাম
◈ জাতীয় পার্টির বিভক্তি স্পষ্ট: জিএম কাদেরকে বাদ দিয়েই কাউন্সিলের ডাক ব্যারিস্টার আনিসুলের ◈ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে এখনো সক্রিয় হাসিনার অনেক পুলিশ-সচিব: জয়নুল আবদিন ফারুক (ভিডিও) ◈ মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আটক ১,১৩৬ বাংলাদেশি সম্পর্কে পার্লামেন্টে দিলেন ভয়াবহ তথ্য ◈ সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মহাপরিকল্পনা চূড়ান্তের পথে ◈ নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে ১৮ বাংলাদেশিকে পুশইন ◈ যুক্তরাষ্ট্রে আজ শুরু হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর তিন দিনব্যাপী মহাসম্মেলন ◈ ইংল‌্যা‌ন্ডে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার পাকিস্তা‌নের ক্রিকেটার, জামিন মিললেও চলছে তদন্ত  ◈ সাকিব‌কে নি‌য়ে ক্রিকেট বোর্ডকে নাটক বন্ধ করতে বললেন খা‌লেদ মাহমুদ সুজন ◈ ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত প্যালেস্টাইনের ফুটবলার পেলে ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: রিজার্ভের স্থিতিশীলতায় নতুন আশা

প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০২:৪৮ দুপুর
আপডেট : ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেয়ের সামনেই জামাইকে গুলি করে খুন করলেন বাবা

ভারতের বিহার রাজ্যে এক তরুণকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যের দরভাঙা জেলায় এ ঘটনা ঘটে। ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণ একটি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্ণপ্রথা ভেঙে বিয়ে করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত তরুণের নাম রাহুল কুমার। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে বেনতা থানাধীন এলাকায় গুলির খবর পায় তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাহুলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নিহত রাহুল কুমার নার্সিংয়ের ছাত্র ছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম প্রেমশঙ্কর ঝা (৪৫)। তার মেয়ে দরভাঙা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ডিএমসিএইচ) নার্সিং শিক্ষার্থী।’ প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রাহুল গত এপ্রিলে প্রেমশঙ্করের মেয়ে তন্নু প্রিয়াকে বিয়ে করেন।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলি করার পর উপস্থিত জনতা প্রেমশঙ্করকে ধরে মারধর করেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ডিএমসিএইচের জরুরি বিভাগের প্রবেশপথ অবরোধ করেন। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

ওই দিনের কথা স্মরণ করে রাহুলের স্ত্রী তন্নু প্রিয়া অভিযোগ করেন, ‘কলেজে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় রাহুল আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল। হোস্টেলে পানি ছিল না, তাই আমি পাওয়ারগ্রিডের দিকে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি, আমার স্বামী তার মোটরসাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভবত দুপুরের খাবার খেতে রুমে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল।’

তন্নু প্রিয়া আরও বলেন, ‘এ সময় আমার বাবা এসে রাহুলের দিকে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, মোটরসাইকেলটি কার? রাহুল জানায়, এটা তার। বাবা তখন আমার চোখের সামনে রাহুলের বুকে গুলি করে পালানোর চেষ্টা করেন। রাহুল আমার দিকে দৌড়ে এসে আমার কাঁধে ঢলে পড়ে। আমরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

তন্নুর অভিযোগ, এ ঘটনার সঙ্গে তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও জড়িত থাকতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ভাই, মা, দাদি, বোন এবং দুলাভাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। সাহারসায় আমার বাবার একটি ক্লিনিক আছে। সেখানে গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড চলে। বাবা আগেও আমাকে বেল্ট দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছেন। তখন রাহুল আমাকে উদ্ধার করে এবং আমরা বিয়ে করি। প্রতিশোধ নিতেই বাবা রাহুলকে হত্যা করেছেন।’

রাহুলের বাবা রমেশ মণ্ডল সুপল জেলার বাসিন্দা। তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ জানায় রাহুলকে গুলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে ডিএমসিএইচের ময়নাতদন্ত কক্ষে পৌঁছে ছেলের মরদেহ দেখতে পাই।’

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলি করার পর উপস্থিত জনতা প্রেমশঙ্করকে মারধর করেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রমেশ বলেন, প্রেমশঙ্কর ঝা তার দুই ছেলে অশ্বিনী ভাটস ও অবনীশ ভাটসকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে এসেছিলেন বলে তিনি শুনেছেন।

রমেশ মণ্ডল পুলিশকে জানান, কিছুদিন আগে প্রেমশঙ্কর তার পরিবারকে হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (প্রেমশঙ্কর ঝা) বনগাঁ থানায় একটি মামলাও করেছিলেন। আদালতে আমাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।’

কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেমশঙ্কর ঝা পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে দাবি করা হয়, রাহুল ও তার পরিবার মিলে তার মেয়েকে অপহরণ করেছে। গত ১ মে সাহারসা জেলার বনগাঁ থানায় অভিযোগটি দায়ের করা হয়। অভিযোগে ঝা বলেন, ২৭ এপ্রিল তার স্ত্রী জানান, তাদের মেয়ে নিখোঁজ।

ওই দিন সন্ধ্যার সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর প্রেমশঙ্কর দাবি করেন, ভিডিওতে দেখা যায় তার মেয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে হেলমেট পরা এক ব্যক্তির সঙ্গে চলে যাচ্ছেন। ওই ব্যক্তি তার মেয়ের সহপাঠী রাহুল কুমার। তিনি ডিএমসিএইচে তার সঙ্গে পড়াশোনা করতেন।

প্রেমশঙ্কর ঝা দাবি করেন, ওই ঘটনার পর তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন। কর্তৃপক্ষ রাহুল ও তন্নুকে তিন দিনের মধ্যে অভিভাবকদের নিয়ে কলেজে হাজির হতে বলে। এরপর তিনি রাহুলদের বাড়িতে গেলে তার পরিবার তাকে গালিগালাজ করে। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতেও দেয়নি।

প্রেমশঙ্কর আরও অভিযোগ করেন, রাহুলের পরিবারের লোকজন তাকে জানায়, তন্নু রাহুলের বোন ও দুলাভাইয়ের কাছে আছে। সে বাবার সঙ্গে কথা বলতে চায় না।

অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রেমশঙ্কর বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় রাহুলের পরিবার। তিনি অভিযোগে লিখেছেন, ‘আমার মেয়েকে রাহুল কুমার ও তাঁর পরিবার অসৎ উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছে। এতে তার ক্ষতি হতে পারে এমন বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে।’

রাহুল কুমারকে হত্যার ঘটনায় গতকাল বুধবার দুপুরে তার পরিবার মামলা করেছে। মামলায় প্রেমশঙ্কর ঝা, তার স্ত্রী গুঞ্জন কুমারি, ছেলে অশ্বিনী ভাটস ও ছেলে অবনীশ ভাটকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি মামলার তদন্ত চলছে। সূত্র: এনডিটিভি

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়