দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ অভ্যাস চোখে না পড়লেও ধীরে ধীরে ক্ষতি করছে মেরুদণ্ডকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিঠের ব্যথা হঠাৎ করে তৈরি হয় না; দীর্ঘদিনের ভুল অভ্যাসই এর মূল কারণ।
ভারতের পরিচিত নিউরোসার্জন ডা. গৌরব বাত্রা হিন্দুস্তান টাইমস–কে বলেন, মেরুদণ্ডের সুস্থতা রক্ষায় সচেতন হওয়া জরুরি। কিছু অভ্যাস একটু বদলালেই দীর্ঘমেয়াদে পিঠের ব্যথা কমানো সম্ভব।
তার মতে, যেসব অভ্যাস মেরুদণ্ডের ক্ষতি বাড়াচ্ছে—
ঘণ্টার পর ঘণ্টা একভাবে বসে থাকা: অফিসে দীর্ঘসময় বসে কাজ করলে কোমরের নিচে চাপ পড়ে। বাঁকা হয়ে বসা বা ঘাড় নিচু করে স্ক্রিন দেখার কারণে পেশি ও ডিস্কে টান লাগে, যা ভবিষ্যতে কোমর ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্রতি ঘণ্টায় অন্তত একবার উঠে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মোবাইলে অতিরিক্ত সময় কাটানো: ঘাড় নিচু করে মোবাইল ব্যবহারে ঘাড়ের পেশিতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি চাপ পড়ে। এতে ‘টেক নেক’ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অলস জীবনধারা: নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম না করলে স্পাইনের সহায়ক পেশি দুর্বল হয়। প্রতিদিন দ্রুত হাঁটা ও হালকা ব্যায়াম জরুরি।
ভুলভাবে ভার তোলা: কোমর না ভাঁজ করে ভারী জিনিস তুললে ডিস্কে চাপ পড়ে ও স্প্যাজম হতে পারে। ভার তোলার সময় হাঁটু ও কোমর ভাঁজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
অতিরিক্ত নরম বিছানা: নরম ম্যাট্রেসে ঘুমালে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক নষ্ট হয়। মাঝারি শক্তির ম্যাট্রেস ব্যবহারই উত্তম।
পেটে ভর দিয়ে ঘুমানো: পেটের ওপর ঘুমালে ঘাড় ও কোমরে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। পাশে কাত হয়ে ঘুমানো এবং হাঁটুর মাঝে বালিশ রাখা বেশি উপকারী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেরুদণ্ড শরীরের ভারসাম্যের মূল ভিত্তি। দৈনন্দিন চলাফেরা, ভঙ্গি ও ঘুমের অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলে পিঠের ব্যথা অনেকটাই কমানো যায়।
আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও এসব অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আজ থেকেই সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সূত্র: জনকণ্ঠ