জাপানিদের লাইফস্টাইল অন্যান্য দেশের মানুষদের থেকে কিছুটা আলাদা। আর এর জন্য তাদের প্রশংসা গোটা বিশ্বজুড়ে। জীবনকে উপভোগ করা এবং সুস্থভাবে বাঁচার পেছনে তাদের চিন্তাভাবনা একেবারে আলাদা।
‘ইকিগাই’, ‘শিনরিন’-এর মতো তত্ত্ব এখন আমাদের দেশের মানুষেরাও জানেন।
কিন্তু হৃদরোগ বা স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য জাপানিরা ‘আশিইউ’ বা জাপানি ফুট বাথ নামে একটি তত্ত্ব মেনে চলেন। এটি স্ট্রোক প্রতিরোধের একটি উপায়। দিনের ১৫-২০ মিনিট এই কাজ করলেই কমিয়ে ফেলতে পারেন স্ট্রোকের ঝুঁকি।
আশিইউ কী
আশিইউ হলো আদতে গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে থাকা। পানির তাপমাত্রা ৩৮-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হবে। গরম পানিতে পা ডুবিয়ে বসলে স্নায়ু ও রক্তনালিগুলো শিথিল হয়। পাশাপাশি পায়ে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং হার্টের জটিলতা সহজেই এড়ানো যায়।
আশিইউ কিভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরের প্রতিটা অংশে রক্ত সঞ্চালন কমতে থাকে।
কিন্তু রক্ত সঞ্চালনে বাধা তৈরি হলে, কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পৌঁছলে, শরীরের ওই অংশটি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর মধ্যে মস্তিষ্কও রয়েছে। যদি কোনো কারণে মস্তিষ্কে রক্তনালি সংকীর্ণ হয়ে যায় বা ফ্যাট জমে, তখন রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি হয় এবং অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষ নিস্তেজ হতে শুরু করে। আর তখনই ঘটে স্ট্রোক।
গরম পানিতে পা চুবিয়ে কিছুক্ষণ বসলে রক্তনালিগুলো প্রসারিত হয় এবং স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে।
পাশাপাশি হার্ট ও কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। এর জেরে হার্টের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পায়। পায়ে ৭ হাজারেরও বেশি স্নায়ু প্রান্ত থাকে। আশিইউ পদ্ধতিটি স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এর জেরে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
কিভাবে প্র্যাকটিস করবেন আশিইউ
একটি বড় গামলা বা পাত্রে গরম পানি নিন। পানির তাপমাত্রা ৩৮-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হতে হবে। একটি শান্তি জায়গায় বসে ওই পানিতে ১৫-২০ মিনিট পা ডুবিয়ে বসুন। একদম শান্ত ভাবে বসতে হবে। এই ১৫-২০ মিনিট আপনি বই পড়তে পারেন, চা খেতে পারেন কিংবা ব্রিদিং এক্সারসাইজ প্র্যাকটিস করতে পারেন। ১৫ মিনিট পরে পানি থেকে পা তুলে নিন এবং পা মুছে নিন।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমার পাশাপাশি এই আশিইউ পদ্ধতি মানসিক চাপ, পায়ের ব্যথা-যন্ত্রণাও কমিয়ে দিতে পারে। ক্লান্তি কাটাতেও এই টোটকা দারুণ উপযোগী।