অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও অনিয়মিত শরীরচর্চার ফলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকে না। এর ফলে হার্টে কোলেস্টেরল জমে বেড়ে যায় স্ট্রোকের সম্ভাবনাও।
হার্টে ব্লক একবার হয়ে গেলে সেটা পুরোপুরি খাবার দিয়ে দূর করা যায় না, কিন্তু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্লক না বাড়ানো এবং কিছুটা উন্নতি ঘটানো সম্ভব। নিচের খাবারগুলো হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী এবং গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত খেলে আঁটকে যাওয়া ধমনি (artery) স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক হতে পারে:
১. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার
উপকারিতা: কোলেস্টেরল কমায়, রক্ত পাতলা রাখে।
খাবার: সামুদ্রিক মাছ (যেমন: রুই, স্যামন, টুনা, সার্ডিন)
২. আঁশযুক্ত খাবার (High-fiber food)
উপকারিতা: খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায়
খাবার: ওটস, লাল চালের ভাত, ব্রাউন ব্রেড
ডাল, মুসুর
সবুজ শাকসবজি, বিশেষ করে পালং শাক
আপেল, কমলা, পেয়ারার মতো ফল
৩. রসুন (Garlic)
উপকারিতা: রক্তনালির ব্লক কমাতে সহায়ক, প্রাকৃতিক স্ট্যাটিনের মতো কাজ করে।
ব্যবহার: প্রতিদিন ১–২ কোয়া কাঁচা রসুন খালি পেটে খাওয়া যেতে পারে।
৪. হলুদ (Turmeric)
উপকারিতা: প্রদাহ কমায়, ধমনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ব্যবহার: দুধ বা গরম পানিতে অল্প হলুদ মিশিয়ে।
৫. জলপাই তেল (Olive oil)
উপকারিতা: ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়, হৃদপিন্ডের ঝুঁকি কমায়।
ব্যবহার: রান্নায় তেলের পরিমাণ কমিয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন
৬. ডার্ক চকোলেট (৮০% কোকো বা তার বেশি)
উপকারিতা: রক্তনালী প্রশস্ত করে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। মাঝেমধ্যে অল্প পরিমাণে খাওয়া উপকারী।
৭. গ্রিন টি ও আদা চা
উপকারিতা: ফ্যাট ও কোলেস্টেরল হ্রাস করে।
কী বাদ দেবেন (সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ): লাল মাংস, ভাজা খাবার, অতিরিক্ত লবণ ও চিনি, গাঁজানো (processed) খাবার, ট্রান্স ফ্যাট (ফাস্ট ফুড, বেকারি আইটেমে থাকে)। এছাড়া ধূমপান ও অ্যালকোহল সম্পূর্ণ ত্যাগ করতে হবে।
এর পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাটুন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। যেকোনো সমস্যায় নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজন হলে স্ট্যাটিন বা অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করুন।
এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু খাবার হার্টে জমে থাকা ব্লক প্রতিরোধে সহায়তা করে যেমন
লাউ: লাউ মোটা হওয়ার হাত থেকে বাঁচায় ও হার্ট ব্লকেজের মতো সমস্যাকে প্রতিরোধ করে। লাউ সেদ্ধ করে তাতে ধনেগুঁড়া, হলুদ ও ধনেপাতা মিশিয়ে সপ্তাহে অন্তত দুই বার খেলে হার্ট ভালো থাকবে।
দুধ ও আমলকী: দুধের সঙ্গে আমলাচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত এক গ্লাস খেলে হার্টের সমস্যা দূরীভূত হয়।
রসুন: শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ দূর করে রসুন। নিয়মিত রসুন খেলে কোলেস্টেরল লেভেল একেবারে কম থাকে। রোজ জলের সঙ্গে রসুনের এক বা দু কোয়া খেলে খুবই উপকার। রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট ব্লকেজের সমস্যা দূর করে।
লেবু পানি: রোজ লেবু পানি পান করলে শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর হয়। লেবুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট ব্লকেজের ঝুঁকি কমায়। উৎস: নিউজ২৪