প্রথম ৩ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ১২/২। বাংলাদেশের ২৯/১। কিন্তু সকালটা সব সময় দিনের পূর্বাভাস দেয় না। ৫ রানে ২ উইকেট খুইয়ে ফেলার পর পাকিস্তান তোলে ২০১ রান। আর লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম তিন ওভারে ২৯ করা বাংলাদেশ অলআউট ১৬৪ রানে। এতে আমিরাতের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারা বাংলাদেশ পাকিস্তানেও শুরু করল হার দিয়ে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৩৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
আমিরাত সিরিজে সেঞ্চুরি করা পারভেজ হোসেন ইমন দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়ে গেলেও তৃতীয় ওভারে বোলার আবরার আহমেদকে টানা ছক্কা মারেন তানজিদ তামিম। সেই ওভারে আসে ১৫ রান। কিন্তু সেই দুটি ছক্কা বাংলাদেশ ইনিংসে হঠাৎ জ্বলে উঠে আবার দপ করে নিভে যাওয়ার মতোই।
ইমনের পর তানজিদ তামিমও আউট হয়ে গেলে রানের চাকা শ্লথ হয়ে পড়ে বাংলাদেশের। ৩৭ রানে ২ উইকেট খুইয়ে ফেলার দেখেশুনে খেলায় মনোযোগী হন অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়; গড়েন ৬৩ রানের জুটি। শেষের দিকে একটু হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন লিটন। হারিস রউফের এক ওভারে দুই ছক্কা মারা লিটন পরের ওভারে শাদাবের বলে আউট। অবশ্য আউট হওয়ার আগে শাদাবকেও ছক্কা মেরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১টি চার ও ৩টি ছয়ে ৩০ বলে ৪৮ রান করেন লিটন। তাঁর বিদায়ের পরের ওভারেই খুশদিল ফিরিয়ে দেন হৃদয়কে (১৭)। ইনিংসের ১৩তম ওভারে হৃদয়ের বিদায়ের পর বাংলাদেশের স্কোর ১০২/৪! ওই ওভার শেষে বাংলাদেশের রানরেট ছিল ৮. ১৫। আস্কিং রানরেট ১৩.৭১!
এরপরও জিততে হলে ব্যাটে আগুনের হলকা তুলতে হতো সফরকারী দলের কাউকে না কাউকে। কিন্তু সেটা কেউই করতে পারেননি। উল্টো নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। ১টি চার ও ৩টি ছয়ে ২১ বলে জাকের আলী ৩৬ রান করলেও তা ব্যবধান কমিয়ে আনা ছাড়া কোনো কাজে আসেনি। বল হাতে সবচেয়ে সফল হাসান আলী, ৩০ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান তোলে পাকিস্তানে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এটাই সর্বোচ্চ রানের স্কোর স্বাগতিকদের। এই মাঠে এর চেয়ে বেশি রানের স্কোর আছে মাত্র একটিই। ২০২২ সালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ২০৯ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড।
শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি পাকিস্তানের। ইনিংসের তৃতীয় বলেই মেহেদী রানের খাতা খোলার আগেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ওপেনার সিয়াম আইয়ুবকে। দ্বিতীয় ওভারেই আবার আরেক ফখর জামানকে (১) দেন শরীফুল ইসলাম। ৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর মোহাম্মদ হারিস ও অধিনায়ক সালমান আগার প্রতিরোধ। তৃতীয় উইকেটে ৪৮ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। হারিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তানজিদ সাকিব।
৫৩ রানে ৩ উইকেটে হারালেও পাকিস্তানি ব্যাটাররা সব সময় রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছেন। তানজিম সাকিবের টানা তিন বলে ৬, ৪ ও ৪ মেরে ২৯ বলে ফিফটি করেন সালমান। আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৫৬। কাছাকাছি গিয়েও ফিফটি পাননি হাসান নওয়াজ। ২টি চার ও ৪টি ছয়ে ৪৪ করে রিশাদ হোসেনের শিকার হয়েছেন। শেষ দিকে শাদাব খান ২৫ বলে ৪৮ ও ফাহিম আশরাফ ৬ বলে ১১ রানে ২০০ পেরোয় পাকিস্তান।
বল হাতে সবচেয়ে সফল শরীফুল ইসলাম। ৩২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, তানজিম সাকিব, রিশাদ হোসেন ও শামীম পাটোয়ারী।