শিরোনাম
◈ ৬ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিল সরকার ◈ তৌহিদ আফ্রিদিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে চাই সিআইডি ◈ ছাত্র-জনতার অবস্থান ফজলুর রহমানের বাসার সামনে, সেনা মোতায়েন ◈ ফেব্রুয়ারিতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা ◈ নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অফিসে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের হামলা, ভাঙচুর, বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একই দিনে বক্তব্য রাখবেন ইউনূস, মোদি ও শেহবাজ ◈ খুলনায় পিকআপ-ইজিবাইক সংঘর্ষে নিহত ৩ ◈ ইনানীতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণ ◈ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ‘ঘনিষ্ঠতাকে’ উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে ভারত! ◈ স্বামী, শাশুড়ি ও দেবরকে আটক রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের চেষ্টা, বাঁচতে দোতলা থেকে গৃহবধূর লাফ

প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট, ২০২৫, ১০:২১ রাত
আপডেট : ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বিনিয়োগ অনিশ্চয়তা, হুমকিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য পূরণ করতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৫.২ থেকে ৪২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নীতিমালার অসঙ্গতি, বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন হুমকিতে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন সিপিডির প্রোগ্রাম এসোসিয়েট মেহেদী হাসান শামীম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় নীতি পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব লক্ষ্যে বাস্তবতাকে পাশ কাটানো হয়েছে। মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২৫-এ ২০৪০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্য ৩০ শতাংশ। আবার সমন্বিত বিদ্যুৎ জ্বালানি মহাপরিকল্পনায় (আইইপিএমপি) ২০৪০ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ শতাংশ।

‘পরিচ্ছন্ন জ্বালানি’ সংজ্ঞার সমালোচনা করা হয়েছে, যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও কার্বন ক্যাপচারের মতো অপ্রমাণিত প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ২০৪১ সালের লক্ষ্য পূরণের মাত্র ৯ শতাংশ প্রচলিত নবায়নযোগ্য উৎস-সৌর ও বায়ু থেকে আসবে। এদিকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানি যুক্ত হয়েছে মাত্র ৩.৬ শতাংশ, যেখানে গ্যাসভিত্তিক জীবাশ্ম জ্বালানির সক্ষমতা ৪৩.৪ শতাংশ। এছাড়া আমদানিকৃত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতাও সমানতালে বাড়ছে।

সিপিডির গবেষণা বলছে, সরকারের জ্বালানি পরিকল্পনার অসামঞ্জস্যতার ফলে একদিকে দেশে জীবাশ্ম জ্বালানির উদ্বৃত্ত সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে লক্ষ্য থাকলেও নবায়নযোগ্য খাতে বিশাল ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশ্লেষণে দেখানো হয়েছে, সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা হতে হবে ১৮ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট। অথচ বর্তমান পরিকল্পনায় রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৯৬৭ মেগাওয়াট, যা আগামী পাঁচ বছরে ১৬ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি ঘাটতি তৈরি করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশকে ২০৪০ সালের নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্য পূরণ করতে মোট ৩৫.২ বিলিয়ন (আমদানি বাদে) থেকে ৪২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন ২০২৫-২০৩৫ সময়কালে, প্রায় ২৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সৌর বিদ্যুতে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলার, বায়ু বিদ্যুতে ১২.৬ বিলিয়ন ডলার, জলবিদ্যুতে ৬ বিলিয়ন ডলার, আমদানি ও অন্যান্য ৭.৪ বিলিয়ন ডলার। পরিকল্পনায় নানা জটিলতা বিদ্যমান থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করছে সিপিডি।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ যদি নীতিগত অস্পষ্টতা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বজায় রাখে, তবে আর্থিক সংকট ও জলবায়ু লক্ষ্যে ব্যর্থতার ঝুঁকি বাড়বে। অন্যদিকে, ঐক্যবদ্ধ ও স্মার্ট কৌশল গ্রহণ করলে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সফল রূপান্তর করতে পারবে। এখনই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সলিমুল্লাহ, ফাহমিদা খানম, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান রেজওয়ান খান, বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়