শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ - পাকিস্তান সি‌রি‌জের নতুন সূচি প্রকাশ ◈ এবার টাঙ্গাইলে শেখ হাসিনার নামে করা মামলা ৪৮ ঘণ্টার মাথায় প্রত্যাহার, কারণ যা জানাগেল ◈ ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত: সেনাবাহিনী প্রধান ◈ দেশের বাজারে আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ◈ দুই মামলায় ব্যারিস্টার সুমনকে কেন জামিন নয়, হাইকোর্টের রুল ◈ নুরের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ ডিএনসিসির, জবাব দিল গণঅধিকার পরিষদ ◈ চাকরিতে শৃঙ্খলা ফিরাতে নতুন অধ্যাদেশ, কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ◈ পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায় বিশৃঙ্খলা করছেন নুর, অভিযোগ ডিএনসিসির ◈ উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজকে পদত্যাগ করতে হবে: ইশরাক (ভিডিও) ◈ নতুন পররাষ্ট্র সচিব হচ্ছেন আসাদ আলম

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০২৫, ০৭:৫৪ বিকাল
আপডেট : ২২ মে, ২০২৫, ১২:৫১ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া; চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি

এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজস্ব প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার থেকে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে লাগাতার অসহযোগিতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

পাশাপাশি তাদের তিনটি প্রধান দাবি হলো— জারিকৃত অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা।

১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে এনবিআরের অধীন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এসব দাবি জানিয়েছে। 

এর আগে দুপুরে এনবিআর কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।

আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এত বড় প্রশাসনিক পরিবর্তন অত্যন্ত গোপন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি এনবিআরের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মতামত না নিয়েই অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করা হয়। ফলে এর স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে ১৪-১৫ ও ১৭-১৯ মে পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন দফতরে আংশিক কলমবিরতি পালন করা হয়। তবে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সভার কারণে কর্মসূচি এক দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল।

সভায় আলোচনার পর হতাশ প্রতিনিধিদল

২০ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ওই সভায় অংশ নেয়। সভায় অর্থ উপদেষ্টা ছাড়াও দু’জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্য, এনবিআরের সাবেক সদস্য, অর্থ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান।

প্রতিনিধিদলের অভিযোগ, ১৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র দু’জনকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। অর্থ উপদেষ্টা সভার শুরুতেই জানান, তিনি দীর্ঘ আলোচনা করবেন না এবং ছয় থেকে সাত মিনিটের মধ্যে বক্তব্য শেষ করতে হবে।

সভায় রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বলেন, জারিকৃত অধ্যাদেশ তাদের সুপারিশের প্রতিফলন নয়। তারা এনবিআর অক্ষুণ্ন রেখে কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই নতুন দুই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নির্ধারণের পক্ষে মত দেন। অন্যদিকে সভায় উপস্থিত দু’জন উপদেষ্টা অধ্যাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন।

সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা গণমাধ্যমকে জানান, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এই অধ্যাদেশ জারি হয়েছে এবং তা বহাল থাকবে। তবে পরামর্শক কমিটির মাধ্যমে কিছু বিষয় সমন্বয়ের চেষ্টা করা হবে। এমনকি তিনি এ–ও বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে কি না, তাতে কিছু আসে–যায় না। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ বলেছে, সভায় কথার সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে ‘ফলপ্রসূ’ বলার প্রচেষ্টা তাদের আহত করেছে।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আন্দোলন আরও সংগঠিত করার লক্ষ্যে এনবিআরের তিন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। বৃহস্পতিবার গ্রেড-১০ ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, এনবিআর চেয়ারম্যান সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন না করে প্রকৃত অবস্থা আড়াল করেছেন। ফলে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পরবর্তী কর্মসূচি

১. ২১ মে সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি পালন করা হবে;

২. ২২ মে দুপুরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান;

৩. ২২ মে এনবিআর এবং ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিজ নিজ দফতরে অবস্থান কর্মসূচি পালন। তবে রফতানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত থাকবে;

৪. ২৪ ও ২৫ মে কাস্টম হাউস, এলসি স্টেশন ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দফতরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি। এই দুই দিন কাস্টম হাউস, এলসি স্টেশনগুলোয় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে রফতানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে;

৫. ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দফতরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়