শিরোনাম
◈ ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের চাপ সামলাবে কে: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বাণিজ্যনীতিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা ◈ ডলারের বিশ্বায়ন: যেভাবে একটি মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতিকে শাসন করছে ◈ ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: চার্টার্ড ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আসছেন আরও ৩০ বাংলাদেশি ◈ যশোরের মনিরামপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে যুবদলের চার কর্মী গ্রেফতার ◈ মিয়ানমারের রাজনীতিতে নতুন মোড়, জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তর! ◈ ইসরায়েলি নাগরিক সাফাদির সাথে সাক্ষাৎ: স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন নুর (ভিডিও) ◈ জিম্বাবুয়েকে হা‌রি‌য়ে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনা‌লে বাংলা‌দেশ ◈ মির্জা আব্বাসের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ (এনসিপি) সরকার? ◈ ফার্মেসির পরামর্শে শিশুর ডায়রিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, গবেষণায় বিপদের ইঙ্গিত ◈ মার্কিন শুল্ক কমলো, যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৭ মে, ২০২৫, ০৬:৩৯ বিকাল
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

আইএমএফ’র শর্তে অর্থনীতিতে বাড়ছে শঙ্কা, বিকল্প খোঁজার তাগিদ

মনজুর এ আজিজ : অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে দুর্ভোগে থাকা দেশের মানুষের জন্য মূল্যস্ফীতির হারে ফের চাপ বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মূলতঃ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়নের ফলেই এই শঙ্কা প্রকট হচ্ছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীতে বলা হয়েছে, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণের শর্ত মানতে গিয়ে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় একদিকে বেড়ে যাবে ডলারের দাম, অন্যদিকে কমবে টাকার মান। ঋণের সুদের হারও বাড়বে, ফলে কমবে টাকার প্রবাহ।

এতে বলা হচ্ছে, বেসরকারি খাতে ঋণের জোগান কমার সঙ্গে ব্যবসার খরচও বাড়বে। এর নেতিবাচক প্রভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমাতে হলে দাম বাড়াতে হবে। ফলে সব পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কারণে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যেতে পারে।

বৈশ্বিক মন্দার কারণে ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে থাকে। ওই বছরের আগস্টে তা বেড়ে ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। গত বছরের জুলাই পর্যন্ত তা বেড়ে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে ওঠে। এমনকি ওই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অবশ্য গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে এ হার গত এপ্রিলে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে আসে। তবে কঠোর মুদ্রানীতির কারণে সুদের হার বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ কম হওয়ায় বেসরকারি খাতে কমেছে কর্মসংস্থানের গতি। এতে বাড়ছে হতাশা।
সরকারের পক্ষ থেকে নানা তৎপরতা থাকলেও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ তলানিতেই রয়েছে। এখনো পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আসেনি, সহায়তার আশ্বাস মিললেও মেলেনি অর্থ। আইএমএফই’র শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে নিতে হচ্ছে কঠোর পদক্ষেপ, যা জনগণের জীবনযাত্রাকে সংকটেই রেখেছে।

দেশে বিদ্যমান অস্থিরতা, উচ্চ সুদহার এবং ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে বেসরকারি খাত ঋণ পাচ্ছে না। গ্যাস সংকটে অনেক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনও গেছে থমকে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত নানামুখী সংকটে নিমজ্জিত হওয়ায় কর্মসংস্থানেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। ফলে বেকারত্ব বাড়ছে, বাজারে অর্থের প্রবাহও কমছে।
সরকারকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য আইএমএফের ঋণের যে শর্ত, তা বাস্তবায়ন করতে গেলে শুধু বেসরকারি খাতই মুখ থুবড়ে পড়বে না, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেলে নিম্নমধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনও সংকটে পড়বে।

পাশাপাশি শর্তমাফিক সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ব্যয় কমালে স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট যে আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। বিদ্যুতের দাম আগেও কয়েক দফা বেড়েছে, আইএমএফের শর্ত মানতে গেলে স্বভাবতই তা আরও বাড়বে।
প্রশ্ন উঠছে, আমাদের কেন শুধু আইএমএফের ঋণের মুখাপেক্ষিই হতে হবে? জনগণের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে, এমন কোনো শর্ত বাস্তবায়ন করা কাক্সিক্ষত নয়। বরং সরকারকেই বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়