শিরোনাম
◈ ঢাবি ছাত্র সাম্যকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেই বর্ণনা দিয়েছে পুলিশ ◈ রাজনীতির পালাবদলে বিপাকে তারকারা: গ্রেফতার, মামলায় জর্জরিত অর্ধশতাধিক শিল্পী ◈ নানা বৈষম্যে চাকরি ছাড়ছেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা! ◈ টিউলিপকে ফেরাতে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি: দুদক চেয়ারম্যান ◈ সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমিকের মৃত্যুর পর বিস্ময়কর দাবি ◈ আওয়ামী লীগের 'কর্মকাণ্ড', ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ◈ দুদকের তলবে সাড়া দেননি টিউলিপ সিদ্দিক ◈ জুনে আসছে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের ৩.৫ বিলিয়ন ডলার, বাজারভিত্তিক ডলার রেট চালুর ঘোষণা গভর্নরের ◈ ম‌হেদী মিরাজ আইসিসির এপ্রিল মাসের সেরা ক্রিকেটার ◈ এবার ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগের নিয়ন্ত্রণ নিলেন আন্দোলনরত নার্সিং শিক্ষার্থীরা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০২৫, ০২:৩৪ দুপুর
আপডেট : ১৪ মে, ২০২৫, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আগামী বাজেটে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আকর্ষণীয় পরিবর্তনের পরিকল্পনা

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এতে বড় ধরনের সংস্কার আনার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে সর্বনিম্ন চাঁদার হার আরও কমানো, ৬০ বছর বয়সের জন্য অপেক্ষা না করে চাঁদাদাতর ইচ্ছামতো যেকোনো বয়স থেকে পেনশন সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি আনুতোষিক হিসেবে এককালীন মোটা অংকের অর্থ সুবিধা চালুর উদ্যোগ।

কোনো ব্যক্তির বয়স ৬০ বছর হওয়ার আগেই সরকার থেকে মাসিক পেনশন সুবিধা পাওয়াকে 'স্বেচ্ছা পেনশন' নামে উল্লেখ করেছে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধা পাবেন চাঁদাদাতারা। তবে  সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে গেলে তার অক্ষমতার সময় থেকেই পেনশন সুবিধা চালু করা হবে।

একইসঙ্গে যেকোনো প্রয়োজনের সময় পেনশন স্কিমে জমা করা মোট অর্থের ২০ শতাংশ এককালীন উত্তোলন করতে পারবেন এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত চাঁদাদাতারা। বর্তমানে এ ধরনের কোনো সুবিধা নেই।

এসব বিধান রেখে সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে আকৃষ্ট করার উদ্যোগ থাকছে আগামী অর্থবছরের বাজেটে। প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার (১৪ মে) বৈঠকে বসছেন পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী অর্থবছর থেকে এসব সুবিধা কার্যকর করবে সরকার।

বর্তমান বিধান অনুযায়ী, ১৮-৫০ বছর পর্যন্ত বয়সীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তবে চাঁদাদাতাদের বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর থেকে তারা মাসিক পেনশন পাবেন।

সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (ফান্ড ম্যানেজমেন্ট) মো. গোলাম মোস্তফা টিবিএসকে জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম জনগণের কাছে আকৃষ্ট করতে বুধবার পর্ষদ সভায় এককালীন আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, "সর্বজনীন পেনশন স্কিমে কত টাকা মাসিক চাঁদা দিলে প্রতিমাসে কত টাকা পেনশন পাওয়া যাবে, তার একটা হিসাব আছে। যদি কেউ আনুতোষিক সুবিধা হিসেবে এককালীন অর্থ উত্তোলন করেন, তাহলে তার মাসিক পেনশনের পরিমাণ কমে যাবে। আর কেউ যদি আনুতোষিক সুবিধা না নেন, তাহলে তার মাসিক পেনশন কমবে না।"

আনুতোষিকের হার মোট জমার কত শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্ষদ কমিটির অনুমোদনের আগে এ বিষয়ে কোনো কিছু বলা সম্ভব নয়।

২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেও চাঁদার বিপরীতে সুদহার ব্যাংকের আমানতের সুদহারের চেয়ে কম হওয়া এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় নিবাসী ও অনিবাসীদের এসব স্কিমে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আগ্রহী করা যায়নি। সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা জনপ্রিয় করতে প্রচার-প্রচারণার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা সফলতার মুখ দেখছে না।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোতে মোট রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৩,৭৩,৭৪১ জন। এদের মধ্যে অনেকে নিয়মিত কিস্তিও পরিশোধ করছেন না।

ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সেখানে এককালীন আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সুবিধা রয়েছে, যা বাংলাদেশের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় নেই।

সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের গ্র্যাচুইটির বিধানের সঙ্গে সর্বজনীন পেনশনারদের গ্র্যাচুইটির হিসাব মিলবে না। এক্ষেত্রে একজন চাঁদাদাতা মোট যে টাকা জমা দেবেন, তার ২৫–৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন গ্র্যাচুইটি বা আনুতোষিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারে।

পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে জানান, তারা মনে করছেন বিদ্যমান সর্বনিম্ন চাঁদার হার অনেক বেশি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় দেশের বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই সঞ্চয় করা দুঃসহ হয়ে পড়েছে। তাই বিদ্যমান ‍স্কিমগুলোর সর্বনিম্ন চাঁদার হার কমানো হবে।

বেসরকারি খাতের জন্য চালু থাকা প্রগতি স্কিমে সর্বনিম্ন চাঁদার হার ২,০০০ টাকা। এটি কমিয়ে ১,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে। ইনফরমাল সেক্টরে সর্বনিম্ন চাঁদার হার ১,০০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। অথচ প্রবাস স্কিমে অন্তর্ভুক্তির হার খুবই সামান্য। এই স্কিমে চাঁদার হার সর্বনিম্ন ২,০০০ টাকা। এটিও ৫০ শতাংশ কমানো হতে পারে।

এছাড়া, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা চুক্তির আওতায় নিয়োজিত কর্মীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর চাঁদাদাতাদের চাঁদাদান সহজ করার জন্য আরও বেশি তফসিলি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন (আইএসএসএ) এর সদস্যপদ নেবে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ। উৎস: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়