শিরোনাম
◈ জুলাই ঘোষণাপত্র না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ◈ নিষিদ্ধ হয়ে গণহত্যাকারীরা সারাদেশে বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনা করছে: আসিফ মাহমুদ ◈ সাভারে মেয়ের হাতে বাবা খুনের আসল ঘটনা নিয়ে যা জানা গেলো ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আনন্দ উল্লাস! (ভিডিও) ◈ পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশকে জামায়াতের কাছে লিজ দিন: ডা. তাহের ◈ জনগণ পলাতক অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ লঞ্চে দুই তরুণীকে পেটানো যুবকের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ, আসলে কী হয়েছিলো? যা জানাগেল (ভিডিও) ◈ তামিম ইকবালকে নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে এতদিন পরে রাস্তায় কেন?

প্রকাশিত : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৮:৫৯ রাত
আপডেট : ০৮ মে, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

গ্যাসের দাম বাড়ানোর শুনানিতে হট্টগোল!

মনজুর এ আজিজ : শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানোর শুনানিতে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। হট্টগোলের কারণে তড়িঘড়ি করে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যেতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিয়াম অডিটরিয়ামে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এরপর বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির পক্ষে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

দুপুর ১২ টায় শুরু হয় জেরাপর্ব। প্রথমেই জেরা করতে আসেন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম। তিনি প্রায় ৫০ মিনিট কথা বলেন। এ প্রস্তাবকে তিনি মারাত্মক গণবিরোধী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই অযৌক্তিক প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ হয়নি।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, এইভাবে আমদানি করে করে শুধু জ্বালানি নয়, সব পণ্য আমদানি করে দেশটা আমদানি নির্ভর করে ফেলা হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ভয়ংকর গণবিরোধী। এই প্রস্তাবের ওপর কোনো গণশুনানি হতে পারে না। এটি বন্ধ করতে হবে। এই সময় শুনানিতে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী, ক্যাবের প্রতিনিধি এবং অন্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা শুনানি বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। ‘প্রহসনের শুনানি বন্ধ করো, করতে হবে, মানি না, মানব না।’ 

বক্তব্যের শেষে ৩ দফা দাবি জানিয়ে শামসুল আলম অবশিষ্ট পর্ব থেকে ওয়াকআউট করেন। তার বক্তব্যের পর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দিতে আসেন।

এ সময় কিছু শিক্ষার্থী ও শিল্প মালিকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। শিক্ষার্থীরা শুনানি বন্ধের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিইআরসির চেয়ারম্যান বারবার তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও হট্টগোল চলতে থাকে। এসময় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আগামী রোববারের মধ্যে খারিজ করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দাবি না মানলে এ আবেদন রূপ নিতে পারে আন্দোলনে। কয়েক মিনিট এভাবে চলার পর নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট পূর্বে মধ্যাহ্ন বিরতির ঘোষণা দিয়ে হল রুম থেকে বের হয়ে যান চেয়ারম্যান।

দুপুর ২ টায় পুনরায় শুনানি শুরু করা হয়। শিল্প কারখানার বয়লার ও শিল্প কারখানার জেনারেটরে (ক্যাপটিভ) সরবরাহ করা গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১.৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তার ওপর শুনানি গ্রহণ করা হয়।

পেট্রোবাংলার দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলেছে, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির বর্তমান আমদানি মূল্য পড়ছে ৬৫.৭০ টাকা। ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ যোগ করলে দাঁড়ায় ৭৫.৭২ টাকা। ফলে এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে গ্যাসের প্রাইস গ্যাপ কমাতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এলএনজি আমদানি করলে চলতি অর্থবছরে পেট্রোবাংলার ঘাটতি হবে প্রায় ১৬ হাজার ১৬১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

পেট্রোবাংলা দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, দেশীয় গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ায় শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। সরবরাহকৃত গ্যাসের মধ্যে দেশীয় গ্যাসফিল্ডগুলো থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৭৫ শতাংশের মতো, অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে করা হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে এবং এলএনজি আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ২০৩০-৩১ অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৫ শতাংশে।

গ্যাসের এই দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তারা অবিলম্বে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। ওই প্রস্তাব অনুমোদন হলে শিল্পায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। 
শুনানি গ্রহণ করেছেন বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, সদস্য মিজানুর রহমান, ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও শাহীদ সারোয়ার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়