শিরোনাম
◈ এক বছরে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি: নাহিদ ইসলাম ◈ কুমিল্লার হোমনায় মাজারে অগ্নিসংযোগ: অজ্ঞাত ২২শ জনের বিরুদ্ধে মামলা, এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি ◈ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন: ২৩২ পদে লড়বেন ৯৩১ প্রার্থী ◈ মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব ফিরিয়ে নেপালের চিকিৎসক বললেন ‘রোগীদের ছেড়ে যাব না’! ◈ ইউপিইউ কাউন্সিলে বাংলাদেশ পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন ◈ আইসিসি উ‌ত্তে‌জিত, পা‌কিস্তান ক্রিকেট দল কড়া শাস্তির মুখে পড়তে পা‌রে ◈ নি'ষিদ্ধ দলের লোককে বাসা ভাড়া না দিতে পুলিশের মাইকিং! (ভিডিও) ◈ নারীদের লেখা বই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম থেকে সরানোর নির্দেশ তালেবানের, যৌন হয়রানি নিয়েও পড়ানো নিষেধ ◈ ঢাকাসহ বি‌ভিন্ন জেলায় আওয়ামী লী‌গের কর্মকা‌ণ্ডে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে?  ◈ টেকনাফের পাহাড় থেকে নারী শিশুসহ ৬৬ জন উদ্ধার!

প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:০৬ দুপুর
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামীলীগ নেত্রীকে রক্ষা করতে বিএনপি নেতার ২ লাখ চাদাঁ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল!

হাবিবুর রহমান সোহেল,কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার শহরে আলোচিত এক আওয়ামী লীগ নেত্রীকে রক্ষার আশ্বাস দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা নুরউদ্দিন খাঁন কোম্পানির বিরুদ্ধে। শুধু টাকা নেওয়াই নয়, পবিত্র কোরআন শরীফ মাথায় রেখে সেই অর্থ গ্রহণ করতে দেখা গেছে তাকে। বহু অপকর্মের হুতো অভিযুক্ত নুরউদ্দিন খাঁন শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

গোপনে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়ার আওয়ামী লীগ নেত্রী রোজিনা আক্তারকে রাজনৈতিক ও পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা করার আশ্বাস দিতে মাথায় কোরআন তুলেছেন নুরউদ্দিন খাঁন। একইসঙ্গে তার হাত থেকে নগদ দুই লাখ টাকাও বুঝে নিচ্ছেন তিনি। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা জুড়ে তীব্র সমালোচনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আ.লীগ নেত্রী রোজিনা আক্তারের অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে আশ্রয় দেওয়া এবং পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা করার কথা বলে প্রথমে দুই লাখ টাকা নেন নুরউদ্দিন। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি। টাকা নেওয়ার পর আরও অর্থ দাবি করেন এই বিএনপি নেতা। রোজিনা বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম আমাকে বিপদ থেকে বাঁচাবেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও আরও টাকার জন্য চাপ দেন। আমি রাজি না হলে তিনি আমাকে হত্যার পর আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন এখন আমি ভয়ে আছি।          

জানা গেছে, বিএনপি নেতা নুরউদ্দিনের বিরুদ্ধে মানব পাচার, পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের অভিযোগ বহু বছর ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এইসব অপকর্মের পরও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তিনি বারবার আইনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, নুরউদ্দিনের নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যায়। অথচ আজ তিনি কোরআন মাথায় রেখে টাকা নিচ্ছেন- এটা শুধু প্রতারণা নয়, ভয়ঙ্কর রসিকতাও। ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝড়তে শুরু করে। অনেকে লিখেছেন, পবিত্র কোরআনকে সামনে রেখে এভাবে প্রতারণা ধর্মীয় অবমাননার সামিল।

কেউ কটাক্ষ করে লিখেছেন, এবার বুঝি কোরআন দিয়ে টাকা তোলার নতুন ব্যবসা শুরু হলো। এক বিএনপি কর্মী লিখেছেন, যে মানুষ কোরআনকে হাতিয়ার বানায়, সে সমাজের নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। এনিয়ে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাকিং থাকায় নুর উদ্দিন সবসময় পার পেয়ে যান। বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে, কোরআন ছুঁয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার ঘটনা শুধু কক্সবাজার নয়, দেশজুড়ে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে বিব্রতকর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নুরউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়, তবে এবার ভিডিও প্রমাণে হাতে-নাতে ধরা পড়েছেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা কেবল ব্যক্তিগত দুর্নীতি নয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির নগ্ন প্রতিফলন। যেখানে মানুষকে বাঁচানো বা ফাঁসানো নির্ভর করছে টাকার লেনদেনের ওপর। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা নুরউদ্দিন খাঁন বলেন, আমি এলাকার সমাজপতি, বিচার-শালিশ সব আমি করি। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এটার প্রতিবাদও দিয়েছি। তবে তাকে প্রশ্ন করা হলে, কেন কোরআন মাথায় তুলে টাকা নেন, নুর উদ্দিন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ফোন কেটে দেন এবং পরে প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, এমন একটি ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। তবে এখনও কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আমাদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হতো। তারপরও আমরা বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে যাচ্ছি। কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে আসার পর থেকে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রথমে তাকে শোকজ করা হবে। যদি সে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়