মাত্র ৫ শ টাকার বিনিময়ে নবজাতক শিশুকে কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে যান ফারুক গাজী। তাকে ক্লিনিকের একজন নার্স বলেছিলেন শিশুটি মৃত। তাই কোথাও ফেলে দিতে। কিন্তু ফারুক গাজী শিশুটিকে ফেলে না দিয়ে নিয়ে যান কবরস্থানে।
সেখানে ৩ শ টাকা নিজের কাছে বাকি ২ শ টাকা কবরস্থানের লোকজনকে দেন। যেন মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আটক হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন ফারুক গাজী। চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের কর্মচারী তিনি।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, কবরস্থানের প্রবেশ পথ ও আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
এরইমধ্যে বেসরকারি এই ক্লিনিকের কোনো নার্স তাকে এমন কাজ করতে বলেছিল। সেই সবকিছু যাচাই-বাছাই করছে গোয়েন্দা পুলিশ এবং তাঁকে যে নার্স দায়িত্ব দিয়েছে তার আগে কোন প্রসূতির সন্তান। তাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
এর আগে গত রবিবার দুপুরে চাঁদপুর পৌরসভার কবরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে আসার ঘটনা ঘটে।
তবে সেখানে থাকা ফারুক মিয়া নামে একজন শিশুটিকে দাফনের আগে আজান দেন। এসময় কার্টনে থাকা শিশুটি কান্না শুরু করে। পরে তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী মুসাদ্দেক আল আকিবের সহায়তায় অর্ধমৃত শিশুটিকে পাশের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ৮ ঘণ্টা লড়ে মারা যায় হতভাগ্য শিশু। ওই রাতেই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই কবরস্থানে দাফন করা হয়। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, কে বা কারা শিশুটিকে এভাবে কবরস্থানে রেখে গেল। তা খুঁজে দেখতে গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেন তিনি।
তবে ঘটনার দুই দিনের মধ্যে জড়িত ব্যক্তি এবং শিশু যে ক্লিনিকে শিশুটি জন্ম নেয়। তাও খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় গোয়েন্দা পুলিশ। তার সঙ্গে জড়িত নার্স এবং শিশুর স্বজনদের আটকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফর রহমান জানান, এই ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।সূত্র: কালের কণ্ঠ