তপু সরকার হারুন, জেলা প্রতিনিধি শেরপুরঃ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি ও ইত্তেফাকের উপজেলা সংবাদদাতা মো. খোরশেদ আলমের ওপর চোরাকারবারীদের হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর এজাহারভুক্ত ২ ও অজ্ঞাতনামা আরও ১ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৬ আগস্ট শনিবার রাতে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রবিবার দুপুরে তাদের শেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন গোমড়া এলাকার মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. কোরবান আলী ও মো. আব্দুস ছামাদ।
এর আগে শনিবার রাতে হামলায় আহত সাংবাদিক খোরশেদ আলমের ছোট ভাই মো. হুমায়ুন খান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এতে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারী একাধিক মামলার আসামি মো. রাসেল মিয়াসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৬ থেকে ৭ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি রাসেল আন্ত:জেলা চোরাকারবারী ও মাদকচক্রের সক্রিয় সদস্য এবং নিজ এলাকায় তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাসেল বাহিনীর প্রধান ও অবৈধ অস্ত্রধারী। সম্প্রতি রাসেলের নেতৃত্বে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ও মাদক কারবার বৃদ্ধি পাওয়ার পরও স্থানীয় লোকজন তার ভয়ে মুখ খুলতে পারে না। এমন সংবাদ পেয়ে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে দৈনিক ইত্তেফাকসহ একাধিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক মো. খোরশেদ আলম। এরপর থেকেই নানাভাবে হুমকিসহ খোরশেদ আলমের ক্ষয়ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজে আসছিল তারা।
গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সাংবাদিক খোরশেদ আলম সন্ধ্যাকুড়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা রাসেল ও তার সহযোগীরা তার উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। ওইসময় তার মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলও নিয়ে যায় হামলাকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। শনিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদলসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলার মূল হোতা রাসেলকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল-আমীন বলেন, গতকাল মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত ২ ও অজ্ঞাতনামা আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।